ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বরিশাল বিভাগের কৃষিতে ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকার বেশি
প্রকাশিত : ৩০ মে ২০২৪
ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও অতিবৃষ্টির কারণে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৫০৮ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বিভাগের এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮১ কৃষক পরিবার।বুধবার এসব তথ্য জানিয়েছেন বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শওকত ওসমান। অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয় জানিয়েছে, রোববার থেকে সোমবার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় রেমাল ও অতিবৃষ্টির কারণে বরিশাল বিভাগের আউশ বীজতলা, আবাদ করা আউশ, চীনা বাদাম, মরিচ, মুগ, তিল, ফেলন শাক-সবজি, পাট, পান, কলা, পেঁপে ও ফল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুই হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল। আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯০ হাজার ৭৯৮ হেক্টর জমির ফসল। ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শাক-সবজির, মোট ২৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের।
এর পরে পান একশ ১৭ কোটি ২১ লাখ ৬০ হাজার, আউশ আবাদের ৫০ কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার, আউশ বীজতলা ৩৬ কোটি ২২ লাখ, মরিচ ৯ কোটি এক লাখ ২০ হাজার, কলা ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৪০ হাজার, ফল এক কোটি এক লাখ ৫২ হাজার, মুগ দুই কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার, তিল ১০ লাখ টাকার, ফেলন ছয় লাখ ৬০ হাজার ও পাট ৪০ লাখ ৬২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। বিভাগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট ১ লাখ ৮০ হাজার ৪৮১ কৃষক পরিবার। এর মধ্যে প্রান্তিক কৃষক হলেন ৬৫ হাজার ২৬৫, ক্ষুদ্র ৭১ হাজার ৫৫৬, মাঝারি ৩০ হাজার ৭৩৮ ও বড় ৫ হাজার ৯৩২ জন রয়েছে। এর মধ্যে আউশ বীজতলা তৈরি করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ২১ হাজার ৬২ জন, আউশ আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ৯৫৮ জন।
এছাড়া, ৬৭ হাজার ১০৫ জন সবজি, ১৭ হাজার ৯৪২ জন পান, ৭ হাজার ৪৯৫ জন কলা, ৬ হাজার ৫৩০ জন মরিচ, ৬ হাজার ২৩০ জন মুগ, ৫ হাজার ৫৮৫ জন পেঁপে, ৫ হাজার ৩৭০ জন চীনা বাদাম, ২ হাজার ২৩ জন তিল, ১ হাজার ৩৬৯ জন পাট, ৮২৫ জন ফেলন এবং ৬ হাজার ২৭ জন বিভিন্ন ফল আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ মন্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেমালে কৃষকরা ভয়াবহ ক্ষতিতে পড়েছেন। কলা ও পেঁপে চাষীরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। কারণ এসব গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। এ থেকে কোনো ফলন আশা করা যায় না।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক শওকত ওসমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কিছু প্রণোদনা এসেছে। আরও প্রণোদনার জন্য প্রকল্প পাঠানো হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে দিয়ে চাষাবাদে আগ্রহী করতে সব ধরনের প্রকল্প নেওয়া হবে। এজন্য শুধু সরকারিই নয়, বেসরকারি উদ্যোগও আসবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।