মৌলভীবাজারে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের উদ্যোগে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
প্রকাশিত : ১৪ ডিসেম্বর ২০২০
মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম মৌলভীবাজার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের উদ্যোগে পৌর জনমিলন কেন্দ্রে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ শীর্ষক সেমিনার’ ও মনোজ্ঞ ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। মৌলভীবাজার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সভাপতি, লেখক ও সাংবাদিক প্রিন্সিপাল এহসান বিন মুজাহির এর সভাপতিত্ব ও ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহ মিসবাহ এর সঞ্চালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মোঃ ফজলুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও উলামা পরিষদ মৌলভীবাজার এর সভাপতি শায়খুল হাদিস আলামা আব্দুল বারী ধর্মপুরী। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিশিষ্ট লেখক ও জনপ্রিয় অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, ঢাকা। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ মাওলানা আলাউর রহমান টিপু, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও ব্যাংকার অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু তাহের, মৌলভীবাজার জেলা সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি বকসি ইকবাল আহমদ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজর প্রভাষক মুহাম্মাদ আসআদুলাহ, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম জেলা শাখা এবং মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাব এর সাধারণ সম্পাদক মশাহিদ আহমদ। অনুষ্ঠানে মৌলভীবাজার পৌর মেয়র মোঃ ফজলুর রহমান বলেন- মহানবী (সা.) কে আমরা প্রাণের চেয়ে ভালোবাসি। মহানবী সা. এর জীবনাদর্শ আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর আদর্শ মতো আমরা চললে সমাজের সর্বত্র শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে। নবীজীকে নিয়ে সেমিনার আয়োজন করায় আয়োজকদের তিনি ধন্যবাদ জানান। কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল বারী ধর্মপুরী বলেন- মহানবী (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন শান্তির বার্তা নিয়ে। আগামী প্রজন্ম মহানবীর জীবনাদর্শকে ঠিকভাবে অনুসরণ করতে পারলে একটি শান্তিময় বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আলাউর রহমান টিপু বলেন- আজ অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে মুসলমান তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ভুলে বিজাতীয় সংস্কৃতির চর্চায় তৎপর। অথচ ইসলামী সংস্কৃতির চর্চা এনে দিতে পারে সুস্থ সংস্কৃতি, আর একটি সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে মূল বিষয় বস্তু হচ্ছে সংস্কৃতির সুস্থতা। কাজেই বিজাতীয় সংস্কৃতি রোধে ইসলামী সংস্কৃতির বিকল্প নেই। বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও লেখক মাওলানা রুহুল আমীন সাদী বলেন-বিশ্বনবী ছিলেন বিশ্ববাসীর জন্য রহমত। এ কারণে অনলাইনে আমাদের বেশি বেশি রাসূলের কথা প্রচার করতে হবে, তাঁর আদর্শের অনুগামী হতে হবে। তাঁর জীবনযাপন, মূল্যবোধ প্রচার করতে হবে। রাসূলকে প্রচার মানেই ইসলামের প্রচার। এসব কারণেই অনলাইনে মহানবী (সা.) এর মাহাত্ম বেশি বেশি প্রচার করতে হবে। সর্বোপরি মিডিয়ার ইতিবাচক দিকগুলো খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়ায় কাজ করে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। লেখক ফোরাম মৌলভীবাজার এর সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবু তাহের বলেন-নতুন প্রজন্মের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌছে দেওয়ার জন্যে ফেসবুক-টুইটার ব্যবহার করা যেতে পারে। শুরু থেকেই ইসলাম ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্রে সমকালীন সময়ের সব আধুনিক মাধ্যমের ব্যবহার হয়েছে, তার অনেক নজির আছে। তবে অনলাইনের বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও লেখা থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন তিনি। দৈনিক মৌলভীবাজার বার্তার সম্পাদক ও প্রকাশক বকসি ইকবাল বলেন- ইসলামের দাওয়াত ও নবীর সুন্নাহ প্রচারের অপার সুযোগ করে দিয়েছে মিডিয়া। তিনি বলেন, দুনিয়াজুড়ে মানুষ মিডিয়াকে গ্রহণ করেছে, বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে নবীর আদর্শ পৌঁছে দিতে হবে। সৈয়দ শাহ মোস্তফা কলেজর প্রভাষক মুহাম্মাদ আসআদুলাহ বলেন-অপসংস্কৃতি রোধে ইসলামী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজের সর্বস্তরে ইসলামের চেতনা ছড়িয়ে দিতে হবে। বেশি করে এ ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা প্রয়োজন। সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি এহসান বিন মুজাহির বলেন-অনলাইন দাওয়াতে দ্বীনের অন্যতম মাধ্যম। মহানবী (সা.) এর মহান আদর্শ ও সৌন্দর্যকে গণমাধ্যমসহ অনলাইনে উপস্থাপন করতে হবে। মহানবীর আদর্শ প্রচারের জন্য অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে আলেম সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে নবীর আদর্শ পৌঁছে দিতে হবে। অন্যান্যদের মধ্যে সেমিনারে আলোচনা করেন, বরেণ্য বুজুর্গ, শায়খে মাধবপুরী (রাহ.) এর সাহেবজাদা মাওলানা নুরুল মুত্তাকিন জুনাইদ, ঐতিহ্যবাহী বরুণা টাইটেল মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি হিফজুর রহমান ফুয়াদ, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা লুৎফুর রহমান জাকারিয়া, রাজনগর বছিরমহল মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা এমদাদুল হক তালুকদার, মৌলভীবাজার দারুল উলুম টাইটেল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা সাইফুর রহমান ফয়সল, দারুল আজহার মডেল মাদরাসা গোয়ালাবাজার মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতি মিনহাজ উদ্দিন মিলাদ, মাধবপুর নোয়াগাও তালিমুল কুরআন মাদরাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা হোসাইন আহমদ খালেদ, সৌদি আরব প্রবাসী মাওলানা হাফেজ হাসান আহমদ। অনুষ্ঠানে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করে দর্শকদের মাতিয়ে তুলেন জনপ্রিয় শিল্পী ঢাকার আহমদ আব্দুলাহ, কিশোরগঞ্জের আবু উবায়দা, সিলেটের ইসহাক আলমগীর, মুচকি হাসির পরিচালক সুফিয়ান বিন এনাম, আবাবিল সাংস্কৃতিক ফোরাম এর শিশু শিল্পী রিয়াজুল ইসলাম মাহিম, মুহাম্মদ শাহরিয়ার সাদী এবং সুরের প্রহরীর আব্দুলাহ প্রমুখ।মৌলভীবাজার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম এর নির্বাহী দায়িত্বশীলদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এহসানুল হক জাকারিয়া, সহ-সভাপতি মাওলানা জুনাইদ আহমদ জুনেদ, ফোরামের জয়েন্ট সেক্রেটারি মুস্তাকিম মুনতাজ তালুকদার, জুবায়ের জুবায়ের আহমদ জুবেল, মাওলানা ইমাদ উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম জহির, আব্দুস সামাদ সুমন, আহমদ শামছুদ্দিন, আশিকুর রহমান চৌধুরী, আশরাফ উদ্দিন শফি, অর্থ সম্পাদক শাহ উসমান আলী জাকি, সহ-অর্থ সম্পাদক মাওলানা এমাদ উদ্দীন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হাসান মাহমুদ, সহ-সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, আতাউর রহমান রাহাত, প্রচার সম্পাদক মোঃ ফজলে রাব্বি, সহ-প্রচার সম্পাদক চৌধুরী মাসউদ সিদ্দিক, সহ-প্রচার সম্পাদক আবু হানিফা, অফিস সম্পাদক ফজলুল হক মুন্না, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ফাহিম বিন আব্দুল জলিল, সহ-শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক শাকের আহমদ রাফি, নির্বাহী সদস্য আনিছ ফাহাদ, সাদিকুর রহমান শাকিল, মোঃ তোফাজ্জল হোসেন। উলেখ্য, মৌলভীবাজার জেলার অনলাইন অ্যক্টিভিস্টদের নিয়ে ২০১৭ সালে সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে সংগঠনটি ধর্ম, সমাজসেবা এবং সাহিত্য-সাংস্কৃতিমূলক নানা কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে।