দেশে সাইবার ক্রাইম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
গাজীপুর মহানগর পুলিশের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে সাইবার ক্রাইম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ ক্রাইম এত বেশি বিস্তার লাভ করেছে যে, সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে আমাদের দেশের মেয়েরা সবচেয়ে বেশি এ ক্রাইমের শিকার হচ্ছে। এ কারণে তাঁরা সব সময় উদ্বিগ্ন থাকে। এ জন্য আমরা সাইবার ক্রাইম ইউনিট গঠন করেছি।
শুক্রবার সন্ধ্যায় গাজীপুর পুলিশ লাইনসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর পুলিশের কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরকে এক সময় আমরা জানতাম ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, টাকশালের জন্য। কিন্তু এখন গাজীপুর অনেক বদলে গেছে। এখানে অসংখ্য শিল্প কারখানা গড়ে উঠেছে। গাজীপুরকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল টাউন বললে বেশি বলা হবে না। এখানে ইন্ডাস্ট্রি এমনভাবে ডেভেলপ করেছে যে, গাজীপুর এখন একটা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। আমরা গাজীপুরসহ মোট ৭টি মেট্রোপলিটন গঠন করেছি। শুধু মেট্রোপলিটন পুলিশ গঠন করিনি।
আমরা সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ২০০৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পুলিশের ৮২ হাজার ৫৮৩টি নতুন পদ সৃষ্টি করে ৮২ হাজার ৫৮৩ জন পুলিশ সদস্য নিয়োগ দিয়েছি। তৈরি করেছি ইন্ডাস্ট্রিজ পুলিশ। গঠন করা হয়েছে টুরিস্ট পুলিশ, নৌপুলিশ, ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন। আমরা এন্টি টেররিজম ইউনিট পুলিশ গঠন করেছি, ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট গঠন করেছি। আমরা সবকিছুই করেছি জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য, তাদের নিরাপত্তার জন্য, তাদের শান্তিতে রাখার জন্য। আমি মনে করি এসব গঠনে আমাদের যে উদ্দেশ্য ছিল, সে উদ্দেশ্য সফল হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘নিশ্চয় আপনারা ৯৯৯-এর সুফল পাচ্ছেন। যেকোনো সময়, দেশের যেকোনো জায়গা থেকে ফোন করেই আপনারা পুলিশি সেবা পাচ্ছেন। ১৫ বছর আগের পুলিশ আর আজকের পুলিশ এক নয়। আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের পুলিশ গঠন করেছি। তিনি চেয়েছিলেন, পুলিশ কোনো বৈদেশিক শক্তির নিয়োজিত পুলিশ হবে না। এ দেশের পুলিশ হবে জনগণের পুলিশ। তারা মানুষের সেবার জন্য, মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করবে। আপনারা গত কোভিডের সময় দেখেছেন। পুলিশ কীভাবে মানুষের পাশে থেকেছে। যখন সন্তান তার বাবা মার লাশ নিতে আসেনি, তখন পুলিশ তার দায়িত্ব নিয়েছে।
গাজীপুরকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে উল্লেখ করে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে পুলিশের আইজি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজধানী যদি ঢাকা হয়, অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে গাজীপুরকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী হিসেবে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। এ দেশের অর্থনীতির ফুসফুস হচ্ছে গাজীপুর। হাজার হাজার ইন্ডাস্ট্রি এবং লাখ লাখ শ্রমিক এখানে কাজ করছে। আমরা প্রতিবছর যে ১৫ মিলিয়ন ডলারের গার্মেন্টস প্রোডাক্ট রপ্তানি করছি। তার অধিকাংশই এ অঞ্চল থেকে রপ্তানি হয়ে থাকে। তাই গাজীপুরকে দেশের অর্থনীতির ফুসফুস বলা ভুল হবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোহাম্মদ আখতার হোসেন। দিবসটি উপলক্ষে জিএমপির উদ্যোগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পরে কেক কেটে ও পায়রা উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় ৫ হাজার অতিথি অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।