প্রবারনা উৎসব রাতের আকাশে উড়বে বর্নিল রঙ বে-রঙের ফানুস
প্রকাশিত : ৯ অক্টোবর ২০২২
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখলীর কলাপাড়ায় রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রবারনা উৎসবে রঙ বে-রঙের ফানুসে রাতের আকাশ বর্নিল হয়ে উড়বে। রবিবার সকালে বিহারগুলেতে নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ প্রবারনা উৎসব শুরু হবে। এ উপলক্ষে উপজেলার বিভিন্ন রাখাইন পল্লীতে বিরাজ করছে উৎসব মুখর পরিবেশ। আর বিহারগুলোতে করা হয়েছে আলোকসজ্জ্বা। প্রতিটি বাড়ীতে অয়োজন করা হয়েছে বিন্নি চালের হরেক রকম পিঠা পুলি। রঙ বে-রঙের কাগজ এবং বাঁেশর কঞ্চি দিয়ে বানানো ফানুস একরে পর এক উড়ানো হবে রাতের আকাশে। এমনই প্রস্তুতি নিয়েছে রাখাইন সম্প্রদায়।
বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার রাখাইনরা ২৩টি পল্লীতে এ উৎসব একযোগে পালন হচ্ছে। আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত শুরু হয়ে কার্তিকের এ পূর্ণিমাতে শেষ হয়। এ সময় বৌদ্ধ বিহারগুলোতে গৌতম বুদ্ধের স্মরণে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালন করা হয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব এ প্রবারণা পূর্ণিমা। এই দিনে গৌতম বুদ্ধ ধর্ম প্রচার শুরু করেন। প্রতি বছর এই সময়ে আকাশে ফানুস উড়িয়ে এবং ধর্মীয় নানা আয়োজনের মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধকে স্মরণ করা হয়।
গোড়া আমখোলা পাড়ার রাখাইন তেননান বলেন, প্রবারনা উৎসবের বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যে বিশেষ আর্কষন হিসেবে ফানুস উড়ানো। এটি অন্য ধর্মালম্বীর মানুষও উপভোগ করেন। বিভিন্ন প্রকার ফানুসের মধ্যে রয়েছে, মালা ফানুস, প্যারাসুট ফানুস, তারা ফানুস, পঞ্চমুখী ফানুস ও লতা ফানুস। একেকটি ফানুস তৈরিতে অন্ততঃ এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। রাখাইন সম্প্রদায়ের নর-নারীরা এ ফানুস গুলো তৈরী করেন।
মিস্ত্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উত্তম মহাথেরো বলেন, প্রবারণা পালি শব্দ, পবারণ’। থেরবাদী বৌদ্ধ বিশ্বে আশ্বিনী পূর্ণিমাকে প্রবারণা পূর্ণিমা বলা হয়। এ প্রবরণা পূর্ণিমা থেরবাদী বৌদ্ধদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশ্বে অপরাপর থেরবাদী বৌদ্ধদের মতো বাংলাদেশের সকল বৌদ্ধরা এ প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করেন।
অং হেলথ্ এন্ড এডুকেশন ডেভেলমেন্ট ফাউন্ডেশন প্রেসিডেন্ট ও বাংলাদেশে কৃষক লগি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নিউ নিউ খেইন বলেন, ফানুস এখন সার্বজনীন উৎসব। সকল ধর্মের লোকজন এ উৎসবে মিলিত হয়ে আনন্দ পায়।
মহিপুর থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, থানা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বার্বক্ষনিক নজরদারী থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে রাখাইন পাড়াগুলোতে পুলিশের টহল অব্যাহত রায়েছে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য বলেন, প্রবারনা পূর্নিমা উপলক্ষে প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারের ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে।