নারীপাচারকারী চক্রের মূলহোতাসহ প্রধান সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩
প্রকাশিত : ১ জুন ২০২৪
দুবাইয়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও বাসা-বাড়িতে কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অসামাজিক কাজে লিপ্ত করার উদ্দেশ্যে দুবাইয়ে নারী-পাচারকারী চক্রের মূলহোতা ইতি বেগম (৩৬) এবং তার প্রধান সহযোগী আকাশ (৩০)‘কে নারায়ণগঞ্জের বন্দর এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
অদ্য ৩১/০৫/২০২৪ তারিখ ১০০০ ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন বন্দর-বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দুবাইয়ে নারী-পাচারকারী চক্রের মূলহোতা ১। ইতি বেগম (৩৬), স্বামী-ওমর ফারদিন খন্দকার@আকাশ, পিতা-ইউসুফ মোল্ল্যা, সাং-পাগলা পশ্চিমপাড়া, থানা-ফতুল্লা, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এবং তার স্বামী ও একাজের প্রধান সহযোগী ২। ওমর ফারদিন খন্দকার@আকাশ (৩০), পিতা-ওমর ফারুক উদ্দিন খন্দকার, মাতা-কাকলী খানম, সাং-বন্দর বাজার(খন্দকার বাড়ী), থানা-বন্দর, জেলা-নারায়ণগঞ্জ’কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৩।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে জানা যায় যে, ধৃত আসামিদের জনশক্তি রপ্তানীর কোন বৈধ লাইসেন্স নেই। ধৃত আসামিরা সামাজিক ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের যুবতী ও কিশোরী নারীদেরকে দুবাইয়ের বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে ও বাসা-বাড়িতে উচ্চ বেতনে চাকুরী, থাকা খাওয়া ফ্রীসহ লোভনীয় সুযোগ-সুবিধার কথা বলে ফাঁদে ফেলে থাকে। দেশের বিভিন্ন এলাকার সাধারণ নারীরা বিনামূল্যে দুবাই গিয়ে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বচ্ছল হওয়ার আশায় দুবাইতে যেতে রাজি হলে তাদেরকে চক্রটির মূলহোতা ইতি বেগমের দুবাই প্রবাসী বোন শিউলী বেগমের নিকট পাঠানো হয়। শিউলী বেগম মূলত দুবাইয়ে পাচারকৃত নারীদের এয়ারপোর্ট হতে রিসিভ করে তার কাছে নিয়ে যায় এবং অপরাপর সহযোগীদের নিয়ে পাচারকৃত নারীদের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে অসামাজিক কাজে বাধ্য করে। অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে অস্বীকার করলে ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দ্বারস্থ হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে এবং দেশে অবস্থানরত পাচারকৃত নারীর পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখায়।
গত ০৮ মার্চ ২০২৪ তারিখ চক্রটি বন্দর থানাধীন ঝাউতলা এলাকার দরিদ্র পরিবারের একজন নারীকে রেস্টুরেন্টে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে দুবাইতে পাচার করে। সেখানে পৌছে কথা অনুযায়ী কাজ না পেয়ে এবং নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে লিপ্ত হতে বাধ্য হয়ে ওই ভুক্তভোগী নারী তার পরিবারকে বিষয়টি জানায়। একই কায়দায় দুবাইতে পাচারকৃত একাধিক নারীকে নির্যাতনের মাধ্যমে অসামাজিক কাজে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও ভুক্তভোগী তার পরিবারকে জানায়। এপ্রেক্ষিতে অদ্য ৩১ মে ২০২৪ তারিখ বন্দর থানাধীন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত নারী পাচারকারী চক্রের দুইজনকে গ্রেফতার করে র্যাব-৩। এসকল অপরাধী চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।