ঢাকা বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫

বাবা স্বাধীনতার বিরোধী ছিলেন, তবে যুদ্ধাপরাধী নন: ব্যারিস্টার আরমান

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৫ দুপুর

সম্প্রতি এক টকশোতে ব্যারিস্টার আরমান তাঁর পিতা, মীর কাসেম আলী সম্পর্কে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে বলেন, তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাগত বিরোধিতা করলেও সরাসরি যুদ্ধাপরাধ বা সহিংস কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না।

টকশোতে উপস্থাপক আরমানকে প্রশ্ন করেন—যেহেতু তাঁর পিতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন, তাহলে তাঁকে ‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের’ বলা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে প্রশ্ন ওঠে, সেই ব্যক্তি যদি স্বাধীনতার বিরোধিতা করে থাকেন, তাহলে তাঁর বিচারের রায়কে কীভাবে তারা “জুডিশিয়ারি কিলিং” দাবি করেন?

এর জবাবে ব্যারিস্টার আরমান বলেন, “রাজনৈতিকভাবে ভিন্নমত থাকা আর মানবতাবিরোধী অপরাধে সক্রিয় ভূমিকা রাখা—এই দুই বিষয় এক নয়।” তাঁর দাবি, তাঁর পিতা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিলেন দেশের ভূ-রাজনৈতিক নিরাপত্তার আশঙ্কা থেকে, কোনো সহিংসতায় অংশ নেওয়ার কারণে নয়।

আরমান জানান, তাঁর পিতা প্রায়ই বলতেন—বাংলাদেশ তখন ভৌগোলিকভাবে ছোট একটি ভূখণ্ড, আর চারদিকে একটি আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রের চাপ। ভারত অতীতে প্রতিবেশী দেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করেছে—এই প্রেক্ষাপটে আশঙ্কা ছিল যে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকা কঠিন হয়ে যেতে পারে। বিশেষত কাশ্মীর, পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের উদাহরণ তাঁদের চোখে ছিল।

আরমানের ভাষায়, “স্বাধীনতা একটি কাম্য বিষয়। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম আলাদা হয়ে গেলে হয়তো সিকিমের মতো দুর্বল হয়ে পড়ব এবং মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্নও হতে পারি।”*

তিনি আরও বলেন, তাঁর পিতা বারবার বলেছেন— “যদি জানতাম বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে মুসলমান পরিচয় নিয়ে বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, তাহলে আমরা কখনই বিরোধিতা করতাম না। আমরা যা করেছি, তা দেশের মানুষের স্বার্থ বিবেচনা করেই করেছি।”

সবশেষে তিনি বলেন, “আমার পিতা রাজনৈতিকভাবে আলাদা অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কোনো মানুষ হত্যা বা সহিংস অপরাধে যুক্ত ছিলেন না—এটাই আমাদের অবস্থান।”

Link copied!