করোনা ও আম্ফানের কারণে এ বছর ঈদে কুয়াকাটায় নেই পর্যটক

প্রকাশিত : ২৭ মে ২০২০

উত্তম কুমার হাওলাদার, কলাপাড়া(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি,২৭মে।। বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস। তার পর দেশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে সুপার সাইক্লোন ঘূর্নিঝড় আম্ফান। এর প্রভাব পরেছে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায়। দীর্ঘ ১৮ কিলোমিটার সৈকত জুড়ে এখন বিরাজ করছে শুনশান নিরবতা। পর্যটন স্পট গুলো আম্ফানের তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরে রয়েছে। হোটেল-মোটেল খাবার রেষ্টুরেন্টসহ নেই কোথাও পর্যটকের কোলাহল। এ বছর ঈদে একেবারেই পর্যটক শূন্য। পর্যটক না থাকায় আবাসিক হোটেল গুলো রয়েছে তালা বদ্ধ।

পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঘরে বসে দিন গুনছে কবে এমন পরিস্থিতিতে। চিরচেনা কুয়াকাটার সৈকত এখন যেন স্থানীয়দের কাছেই অচেনা লাগছে। জনমানবহীন সৈকতের পুর্ব-পশ্চিমে বালিয়ারী ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ছে না। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদের এমন সময় আবাসিক হোটেল মোটেল গুলোতে পর্যটকদের ভীড় লেগে থাকতো। রাত্রিযাপনের জন্য অগ্রিম বুকিং দিয়েও পর্যটকদের রুম সংকটে ভূগতে দেখা গেছে। সেখানে এ বছর আবাসিক হোটেল গুলো রয়েছে তালা বদ্ধ। খাবার হোটেল, ঝিনুকের দোকান, কাকড়া ফ্রাইয়ের দোকান সহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা। করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে পর্যটকদের ভ্রমনে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন।

পর্যটনমুখী ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে রমজানের ঈদের সময় পর্যটক শুন্য কুয়াকাটা তারা আর দেখেনি। প্রতিবছর ঈদের সময় কুয়াকাটা সৈকতে সাজ সজ্জা ও আলোক সজ্জায় জলমল করতো। কিন্তু সেখানে এখন সন্ধা নামলেই ভূতুরে অবস্থা। হোটেল মোটেল গুলো নানা রঙ্গে সাজানো থাকতো। সেখানে এখন উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। সন্ধ্যার পরে মানুষ শুন্য কুয়াকাটা সৈকতে নামলে গা ছম ছম করে। নেই আলোক সজ্জা, মরণব্যাধি ঘাতক করোনা প্রতিরোধে সরকারের সর্বোচ্চ সতর্কতার কারণে কুয়াকাটার এমন দৃশ্য বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ ইসাহাক বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীণ হয়েছে হোটেল মোটেল, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সহ কুয়াকাটায় অবস্থানরত ট্যুর অপারেটর ও ট্যুরিষ্ট গাইডরা। বেকার হয়ে পরেছে পর্যটনমুখী স্বল্প আয়ের মানুষগুলো। এছাড়া ঘূর্নি ঝড় আম্ফানের তান্ডবে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলেছে পর্যটন স্পট গুলো। এখন চিরো চেনা কুয়াকাটা যেন অচেনা হয়ে গেছে।

সমুদ্র বাড়ি রিসোর্ট’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম মিরন বলেন, উপজেল প্রশাসনের নির্দেশনার পর আমাদের হোটেল বন্ধ রাখা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত হোটেলের কর্মচারীদের ছুটি দেয়া হয়েছে। ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, ঈদে পর্যটক শুন্য কুয়াকাটা এই প্রথম দেখেছেন তিনি। পর্যটক ছাড়াও স্থানীয় নারী শিশু সহ হাজার মানুষ ঈদের দু’য়েক দিন আগে থেকে ভীড় জমাতো সৈকতে। কিন্তু সেখানে ভিন্ন চিত্র বিরাজ করছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিষ্ট পুলিশের সিনিয়র এএসপি মো.জহিরুল ইসলাম জানান, বর্তমানে কুয়াকাটায় কোন পর্যটক নেই। এখানকার হোটেল মোটেল গুলোকে বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হোটেলে মোটেলে বুকিং না রাখার জন্য হোটেল মালিকদের বলে দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :