ভারত-চীন সীমান্তে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারী অস্ত্রের ঝনঝনানি

প্রকাশিত : ১ জুন ২০২০

ভারত ও চীনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এবার দেশ দুটি সীমান্তে ভারী অস্ত্র মজুত করছে। পূর্ব লাদাখের সীমান্ত অঞ্চলে ধীরে ধীরে এসব অস্ত্র নিয়ে যাচ্ছে দুই দেশ। ভারী অস্ত্রের মধ্যে কামান এবং যুদ্ধের গাড়িও রয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিগত ২৫ দিন ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘাতের পরিবেশ বিরাজ করায় এসব অস্ত্রের মজুত করা হচ্ছে।

বর্তমানে চীন সেনাবাহিনী সীমান্তের যে এলাকায় রয়েছে সেখান থেকে ভারতের অংশে ঢুকতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা লাগবে। লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের বিভিন্ন জায়গায় ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়াচ্ছে চীনা বাহিনী। ভারতীয় সূত্রের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, চীনের সেনাবাহিনী লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলের কাছের ঘাঁটিগুলিতে নানান যুদ্ধের গাড়ি ও ভারী যুদ্ধের সঞ্জাম নিয়ে এসেছে। বিষয়টি জানতে পেরে ভারতও আর্টিলারের মতো অস্ত্র ওই এলাকায় পাঠিয়েছে। এদিকে ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে পুরোদস্তুর বিমানঘাঁটি গড়ে তুলছে চীন। তাদের ঘাঁটিতে জে-১১ বা জে-১৬ যুদ্ধ বিমানও রয়েছে। গত ২৬ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর দেয়।

খবরে বলা হয়, লাদাখে প্যাংগং লেকের ২০০ কিলোমিটার দূরে তিব্বতের ‘গাড়ি কুনসা’য় দশ বছর আগেই একটি বিমানবন্দর বানিয়েছে চীন। বেইজিং তখন জানিয়েছিল, অসামরিক বিমান পরিবহণের জন্যই ওই বিমানবন্দর তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে, গত এক মাসে ওই বিমানবন্দরের সম্প্রসারণের কাজ রাতারাতি বেড়ে গেছে। এবং সেখানে রীতিমতো একটি বিমানঘাঁটি তথা এয়ারবেস বানিয়ে ফেলেছে চীন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, সেখানে যুদ্ধবিমানও দাঁড় করিয়ে রেখেছে চীনের বিমানবাহিনী।

এদিকে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তরাঞ্চলীয় প্যাংগং লেকের তীর, ডেমচক ও গালোয়ান উপত্যকা অঞ্চলের চার-পাঁচটি এলাকায় অমীমাংসিত চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) অন্তত ১২শ’ থেকে ১৫শ’ সদস্য একদম মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। ২৫ মে একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, পিএলএর কিছু সীমান্ত প্রতিরক্ষা রেজিমেন্ট অমীমাংসিত চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখার নিকটবর্তী হয়েছে। কমপক্ষে ৫০০ সেনাকে মহড়া থেকে ওই অঞ্চলের সীমান্তের দিকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়েছে, চীনা সৈন্যরা এবার ঘাঁটি তৈরি করেছে লাদাখের গালওয়ান ভ্যালির মতো সম্পূর্ণ নতুন জায়গাতেও, যেখানে আগে কোনও বিরোধের ইতিহাস ছিল না। তবে দুই দেশের এমন মুখোমুখি অবস্থান দেখা গেলেও এখনো সহিংসতার কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার হটলাইনে আলাপচারিতা এবং ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ে সমঝোতার চেষ্টা হলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

 

আপনার মতামত লিখুন :