মাংস ব্যবসায়ী সমিতি সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য

প্রকাশিত : ১১ জুলাই ২০২০

(১) ভারত, মায়ানমারের গরু, মহিষ, মাংস আমদানি নিষিদ্ধ, (২) চামড়া শিল্পের সিইটিপি, রপ্তানীর জন্য ছাড়পত্র, (৩) গাবতলি গরুর হাটের অতিরিক্ত খাজনা আদায় বন্ধ, (৪) মাংস শ্রমিকদের প্রশিক্ষন, (৫) কোরবানির কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এই ৫ দফা দাবীতে বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি ও ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়শন সেগুনবাগিচায় ১১ জুলাই ২০২০ইং শনিবার ১২ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদ আহম্মেদ, মহাসচিব রবিউল আলম, ঢাকা মেট্রোপলিটন মাংস ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক শামিম আহম্মেদ কোরেশী, বাংলাদেশ পশুর বর্জ্য সংগ্রহকারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহম্মেদ, বাংলাদেশ ডেইরী ফার্ম মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান।

(১) ভারতীয় ও মায়ানমার থেকে গরু মহিষ ও মাংস আমদানী বন্ধ করতে হবে, দেশিও পশু পালন উন্নয়েনর স্বার্থে। ভারত মায়ানমার গরু পাচার করে প্রতি বছর ৬০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশি মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ১০ ও ২০ হাজার কোটি টাকা কৃষককে কৃষি ঋণের মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়ে চরঞ্চল গুলো পশু পালনের আওতায় আনতে পারলে মাংসের ও কোরবানী পশুর চাহিদা পুরন করেও বিদেশে মাংস, হাড়, শিং, নাড়ী, ভুড়ি, চামড়া রপ্তানী করে ৬০ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারবো। আস্তে আস্তে চরঞ্চল, পাহাড়ী অঞ্চল গুলো পশু পালনের আওতায় আনতে পারলে বিশ্বকে আমরা সুস্বাধু মাংস উপহার দিতে পারবো। ইতি মধ্যে স্বর্ণচরে আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী পশু পালন প্রকল্প শুরু করে দিয়েছে। দেশে অনেক গরু ও মহিষের খামার গড়ে উঠেছে। ভারত, মায়ানমার পশু পাচার বন্ধ করতে না পারলে, দেশিও পশু পালন উন্নয়ন ও সিমান্ত হত্যা বন্ধ করা যাবে না। সরকার, শিল্পপতি ব্যবসায়ী, সমাজে প্রতিষ্ঠিতরা যাকাতে অর্থ থেকে গরিব, কৃষক, বিধবা, বেকার যুব সমাজে মাঝে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়ার বাচ্চা উপহার দিয়ে পশু পালনে উৎসাহিত করতে পারি। বিশ্বকে তাক লাখিয়ে (৩০০) টাকায় মাংস খাবো। (২) চামড়া শিল্প উন্নয়ন ও রপ্তানীর প্রধান প্রতিবন্দকতা বর্জ্য ও পানি শোধনাগার সিইটিপি পরিপূর্ণ কমপ্লিট করতে হবে। রপ্তানী স্বচল না হলে সরকারের শত শত কোটি টাকা ব্যায়ে চামড়া শিল্প নগরি উন্নয়নের সফলতা আমরা ভোগ করতে পারবোনা।

(৩) মাংস শ্রমিকদের প্রশিক্ষন, মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মাধ্যমে দিতে হবে। মাংস শ্রমিকদের প্রশিক্ষন হাতে কলমে দিতে পারলে।রপ্তানী যোগ্য শত শত কোটি টাকার পশুর বর্জ্য রক্ষা করা যাবে জবাই খানা বৃত্তিক দীর্ঘ মেয়াদী প্রশিক্ষনশালা গঠন করতে হবে, প্রশিক্ষনের সু- ফল পেতে। (৪) কোরবানীর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে জাতিকে অবহিত করার লক্ষ্যে। দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের। ইতিমধ্যে প্রতি বছর মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে। চলতি বছর করোনার অজুহাতে যেন বন্ধ না হয়।
(৫) পশু পালন উন্নয়ন ও মাংসের মুল্যবৃদ্ধির কারন পশুর হাটের খাজনা, ইজারাদারের মাস্তান বাহিনীর অত্যাচার। সরকার নির্ধারিত শতকরা ৫ টাকা খাজনা দিয়ে কৃষক পশু পালনে উৎসাহিত হবে না, একটি গরুতে ৫ (পাঁচ হাজার) টাকা খাজনা দিয়ে কৃষক লাভবান হতে অনেক সময় লাগবে। ৫ (পাঁচ হাজার) টাকা খাজনা দিয়ে মাংস ব্যবসায়ীরা মাংসের দাম কমাতে পারবেনা, তার উপর একটি গরু তিনবার বিক্রি হলে ১৫(পনের হাজার) টাকা খাজনা দিতে হবে। ইজারাদারের অতিরিক্ত খাজনা আদায়তো আছেই। গরুর হাটের জন্য আইন আছে ইজারার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করার জন্য ভ্রাম্যমান আদালত, ভোক্তা অধিকার স্থানীয় সরকার ও সিটি কর্পোরেশন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ আজ পর্যন্ত কোন অনিয়মের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেন নাই। সু-দীর্ঘ আন্দোলনে আপনারাই আমাদের সাক্ষী ছিলেন এবং আছেন।

গরুর হাটের সরকার (ইজারাদারের) নিজস্ব আইন চলে চলছে, মাথায়বারী দিয়ে টাকা আদায় করবে, না পকেট কেটে নির্ধারন করবে ইজারাদারের ইচ্ছার উপর নির্ভর। শত শত অভিযোগ করে ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন ও উপজেলা কর্মকার্তাদের কাছ থেকে কোন আইনগত সহায়তা পাওয়া যায় নাই। তার উপর কোরবানীর পশু হাট গুলো মাত্র তিন দিনের জন্য, জন নিরাপত্তার নামে আইনশৃংখলা বাহিনী গরু হাটের ইজারাদারের অবৈধ অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। অত্যাচারিত হওয়া, অতিরিক্ত খাজনা দিয়ে ভোক্তা বিচারের আশা করেন না দীর্ঘ সূত্রতার জন্য। কোরবানীর হাটের জন্য পুলিশ, র‌্যাব, ভ্রাম্যমান আদালত ও ভোক্তা অধিকারকে ক্ষমতা দেওয়া হয় নাই, গরুর হাটের ইজারাদারকে জবাব দিহিতায় আনার জন্য একমাত্র সম্পতি বিভাগের। টাকার বিনিময় অথবা ভয়ে হউক, স্বাধীনতার ৫০ বছরে একটি গরু হাটের ইজারাদারকে জবাব দিহিতায় আনা হয় নাই। ৪৫ বছরের ইতিহাসে চলতি বছর রমজানে মাংসের মুল্য নিধারন করা যায় নাই, মেয়র গনের অসহযোগিতা ও গরুর হাটের ইজারাদারে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের জন্য।

প্রিয় বন্ধুরা উপরে উল্লেখিত বিষয় যদি মাংস ব্যবসায়ী আর গরুর হাটের ইজারাদারদের মধ্যেই সীমাবদ্ধতায় রাখেন, সমাধান হবে না। উল্লেক্ষিত বিষয় জাতীয় রপ্তানীর সরকারের রাজস্ব আয়, উন্নয়ন যুক্ত। দেশটা আমাদের সরকার আমাদের। একজন ইজারাদার তার স্বেচ্ছাচারিতার জন্য পুরো জাতিকে জিম্মি করতে পারে না। ঢাকা এখন আর আগের স্থানে নাই। একটি মাত্র গরুর হাট দিয়ে ঢাকা চলতে পারে না। একটি মাত্র গরুর হাট থাকাতেই মাংস ব্যবসায়ী জিম্মি। মিরপুরে মাস্তান চক্র গড়ে উঠেছে, গরুর জন্য রাত্রিকালীন যানজটে পরিনত হচ্ছে ঢাকা নগরী। ঢাকার তিন পাশে গাবতলিতে আছে, মেরাদিয়া, খিলক্ষেত অথবা বেড়াইত, উত্তর সিটি কর্পোরেশন একটি গরু হাট করতে পারেন। দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন ইতিমধ্যে লালবাগ ও ডেমরায় স্থায়ী গরুর হাট করতে প্রস্তাব গ্রহন করা হয়েছে, বাস্তবায়ন করতে পারলে কোরবানীর জন্য অস্থায়ী গরু হাটের প্রয়োজন হবে না। যানজন থেকে অনেকাংশে মুক্তি পাবে ঢাকা। বিস্তারিত প্রশ্ন উত্তর পর্বে দেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :