কোরবানির শেষ সময়ে মুকীম হলে

প্রকাশিত : ২৪ জুলাই ২০২০

ইয়াসমিন আক্তার, লন্ডন

মাসআলা : ৬৪. কোরবানির সময়ের প্রথম দিকে মুসাফির থাকার পরে ৩য় দিন কোরবানির সময় শেষ হওয়ার পূর্বে মুকীম হয়ে গেলে তার উপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। পক্ষান্তরে প্রথম দিনে মুকীম ছিল অতপর তৃতীয় দিনে মুসাফির হয়ে গেছে তাহলেও তার উপর কোরবানি ওয়াজিব থাকবে না। অর্থাৎ সে কোরবানি না দিলে গুনাহগার হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৬, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৯

কোরবানির পশুতে ভিন্ন ইবাদতের নিয়তে শরীক হওয়া-
মাসআলা : ৬৫. এক কোরবানির পশুতে আকীকা, হজ্বের কোরবানির নিয়ত করা যাবে। এতে প্রত্যেকের নিয়তকৃত ইবাদত আদায় হয়ে যাবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬, আলমাবসূত সারাখছী ৪/১৪৪, আলইনায়া ৮/৪৩৫-৩৪৬, আলমুগনী ৫/৪৫৯

কোরবানির গোশত দিয়ে খানা শুরু করা-
মাসআলা : ৬৬. ঈদুল আযহার দিন সর্বপ্রথম নিজ কোরবানির গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত। অর্থাৎ সকাল থেকে কিছু না খেয়ে প্রথমে কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। এই সুন্নত শুধু ১০ যিলহজ্বের জন্য। ১১ বা ১২ তারিখের গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত নয়। -জামে তিরমিযী ১/১২০, শরহুল মুনয়া ৫৬৬, আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৬, আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৩

কোরবানির পশুর হাড় বিক্রি-

মাসআলা : ৬৭. কোরবানির মৌসুমে অনেক মহাজন কুরবানীর হাড় ক্রয় করে থাকে। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানীদাতার জন্য নিজ কোরবানির কোনো কিছু এমনকি হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। আর জেনে শুনে মহাজনদের জন্য এদের কাছ থেকে ক্রয় করাও বৈধ হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, কাযীখান ৩/৩৫৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১

রাতে কোরবানি করা-
মাসআলা : ৬৮. ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে কোরবানি করা জায়েয। তবে রাতে আলোস্বল্পতার দরুণ জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১০

কাজের লোককে কোরবানির গোশত খাওয়ানো-
মাসআলা : ৬৯. কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদেরকেও গোশত খাওয়ানো যাবে।-আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬, ইমদাদুল মুফতীন

জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া-
মাসআলা : ৭০. কোরবানি পশু জবাই করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েয। তবে কোরবানির পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া যাবে না। -কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৬৫

মোরগ কোরবানি করা-
মাসআলা : ৭১. কোনো কোনো এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে মোরগ কোরবানি করার প্রচলন আছে। এটি না জায়েয। কোরবানির দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়, তবে কোরবানির নিয়তে করা যাবে না। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৪, ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২০০

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের মাঝে যাদেরকে কোরবানি দেওয়ার তৌফিক করছেন তাদেরকে সঠিকভাবে কোরবানি দেওয়ার তৌফিক দান করুন আল্লাহুম্মা আমিন।

লেখকঃ হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী
সাবেক ইমাম ও খতিব কদমতলী মাজার জামে মসজিদ সিলেট।

আপনার মতামত লিখুন :