মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে আ.লীগ সরকার

প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০২০

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকের আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গণতন্ত্রের বিপক্ষে গিয়ে স্বৈরাচারী পথে হেঁটে মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই, বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড বন্ধ চাই, সাংবিধানিক শাসন চাই, খুন-গুমের রাজনীতি বন্ধ চাই, সব বিনাবিচারে হত্যা-গুম-খুনের বিচার চাই।

বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় উত্তরার নিজ বাসা থেকে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্তমান সরকারের অধীনে দেশে প্রায় ৩ হাজার মানুষ পুলিশ, র‌্যাব, ডিবির হাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। ২০২০ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত ১৩৪ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এর অধিকাংশই বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী।

তিনি বলেন, ১০ বছর সময়ের মধ্যে দেশে জেল কাস্টডিতে মারা গেছেন ৭৯৫ জন। গুম হয়েছেন ৬০১ জন। ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ৭ হাজার ৮০৬ জন নারী। ১ হাজার ৯৩৪ জন শিশু নির্যাতিত হয়েছে। ১৮ জন শিশু হত্যার শিকার হয়েছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে এক লাখের ওপর রাজনৈতিক মামলা হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে পুলিশ হত্যা করেছে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। অনেক পরিবারের সদস্যরা মামলা করতেও সাহস পায় না। সেনাবাহিনীর একজন মেজর এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা, সমগ্র জাতি যেভাবে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে তাতে মেজর সিনহার পরিবার সাহস পাচ্ছে, বিচারপ্রার্থী হতে পারছে। আমরাও মেজর সিনহা হত্যার বিচার চাই, সব বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন এ দেশের মাটিতে হবে, সে আস্থা এবং বিশ্বাস রাখি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর আইএসপিআর থেকে জানানো হয়েছে যে, পুলিশের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না। যদি তাই হয়, তাহলে আমরা বলতে চাই, ক্রসফায়ারে হত্যাকাণ্ড ঘটানো বা না ঘটানো পুলিশ বাহিনীর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ঠাণ্ডা মাথার সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্ত?

বিনা বিচারে মানুষ খুন-গুম কখনো মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে যায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান এটা সমর্থন করে না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য, ভিন্নমতকে দমন করার জন্য এ ধরনের খুন-গুম-অত্যাচার আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ এর ধারা-২ (২) (ক) এর অধীন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবেও গণ্য হতে পারে।

আপনার মতামত লিখুন :