১০ বছরেও শেষ হয়নি ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হত্যার বিচার

প্রকাশিত : ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও বিচার পায়নি তার পরিবার। এতে অপরাধীরা আদৌ শাস্তির আওতায় আসবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছেন তারা। এদিকে আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ফারুক হত্যার বিচার দাবি ও তার স্মরণে শোক র‌্যালি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। সাড়ে ১২টায় দলীয় টেন্ট থেকে শোক র‌্যালি নিয়ে শাহ মখদুম হলের সামনে তার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এ সময় শহীদ ফারুকের সম্মানে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন তারা। রাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনুর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন, নিহত ফারুকের বোন আসমা বেগম, রাবি ছাত্রলীগ সভাপতি গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ২০১০ সালের এই দিনে ফারুককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজ হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সুষ্ঠু বিচার পায়নি। আমরা দ্রুত আমাদের ভাই হত্যার বিচার চাই। এ সময় ফারুক হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসাসিদের অতি দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা এবং তার বোনের চাকুরি স্থায়ীকরণের দাবি জানান তারা।

এ সময় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ আহমেদ, দপ্তর সম্পাদক আবুল বাশারসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে ফারুকসহ সকল শহীদদের স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় শাহ্ধসঢ়; মখদুম হল অডিটোরিয়ামে বিকেলে মিলাদের আয়োজন করা হয়েছে।

বিচারের বিষয়ে নিহত ফারুকের বোন আসমা আক্তার জানান, আমার ভাই হত্যার ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও দৃশ্যমান কোনও বিচারের অগ্রগতি দেখছি না। প্রতিবছরই এসে বিচার চাই কিন্তু বিচার পাই না। এ নিয়ে আমরা খুবই হতাশ। হত্যাকারীদের বিচার হলে কিছুটা স্বস্তি পেতাম। তাই দ্রুত বিচারের দাবি জানাই।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ-শিবিরের সংঘর্ষের রাতে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম হলে তাকে খুন করে লাশ ম্যানহোলে ফেলে রাখা হয়।

হত্যাকাণ্ডের পরের দিন ৯ ফ্রেবুয়ারি নগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তৎকালিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু। এদিকে পুলিশ বাদি হয়ে হত্যা মামলা ও আরও একটি মামলা করেন বিষ্ফোরক দ্রব্য আইনে। ৫ তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনে ২ বছর পর ২০১২ সালের জুলাইয়ের ৮ তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন সর্বশেষ তদন্ত কর্মকতা রাজপাড়া থানার অফিস ইনচার্জ জিল্লুর রহমান। অভিযোগপত্রে ১১০ জনকে আসাসি চিহ্নিত করা হয়।

গত বছরের ২৫ জুলাই ফারুক হত্যা মামলায় জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ ১০৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে রাজশাহীর অতিরিক্ত মহানগর ও দায়রা জজ আদালত। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক এনায়েত কবির সরকার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের নির্দেশ জারি করেন। ১১০ জনের মধ্যে ৬ জন মারা যান।

২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে শিবির কর্মীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এসএম হলের ছাত্রলীগ কর্মী ফারুককে কুপিয়ে হত্যার পর লাশ পার্শ্ববর্তী সৈয়দ আমীর আলী হলের ম্যানহোলে ফেলে দেয়। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু জামায়াত-শিবিরের ৩৫ নেতাকর্মীর নামসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নগরীর মতিহার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আপনার মতামত লিখুন :