প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস: মা-মেয়ের যে ভিডিও কাঁদালো বিশ্বকে

প্রকাশিত : ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আসছে না করোনা ভাইরাস। বিশেষ করে চীনে যেন দিনদিন এর ভয়াবহতা বাড়ছে। এ পর্যন্ত এই ভাইরাসে আক্রান্তে হয়ে মারা গেছে সাত শতাধিক। আর আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আতঙ্কে প্রায় অবরুদ্ধ চীনের একজন নার্স ও তার নয় বছরের মেয়ের একটি ভিডিও বিশ্ববাসীকে কাঁদিয়েছে। একই সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশটি যে ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে চীনের হুনান শহরের একটি হাসপাতালের সামনে ধারণ করা ভিডিও টি পোস্ট করা হয়।

করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করলে গত মাসে ৩৯ জন মেডিকেল স্টাফের সঙ্গে লিউ হাইয়ানকে শহরের ফুগোউ কান্ট্রি পিপলস হাসপাতালে ডেকে নেয়া হয়। এর পর থেকে লিউ হাইয়ান টানা ১০ দিন ওই হাসপাতালে মরণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। সেবা দিতে গিয়ে ন্যূনতম বিশ্রামের সুযোগটিও পাচ্ছেন না সেখানে কর্মরত হাজারো নার্স চিকিৎসকের মতো লিউ হাইয়ান।

৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, রোগীদের সেবা দিতে টানা ১০ দিন ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা লিউ হাইয়ানের সঙ্গে তার ৯ বছরের মেয়ে চেং শিওয়েন ও ও তার স্বামী দেখা করতে এসেছেন। কিন্তু কাছে যাওয়ার নিয়ম নেই তাদের। যদি সংক্রমণ ঘটে ভাইরাসের! তাই হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে মেয়ে ও স্বামীর সঙ্গে কথোপকথন হচ্ছে তার।

ক্রন্দনরত মেয়েকে বলতে শোনা গেছে, মা তুমি দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরে এসো। তোমাকে ছেড়ে থাকতে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। জবাবে সেই নার্সও কাঁদতে কাঁদতে মেয়েকে বলেছেন, মা, আমরা এখানে দানবের (করোনাভাইরাস) সঙ্গে লড়াই করছি। এ লড়াইয়ে জয়ী হয়েই তবে আমি তোমাদের মাঝে ফিরব।

ভিডিওর একপর্যায়ে মা ও মেয়েকে দূর থেকে প্রতীকী আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। পরে মেয়ে মায়ের জন্য বক্সে আনা কিছু খাবার মাটিতে রেখে যায়। এ সময় মা পেছনে সরে যায়। পরে মেয়ে পেছনে সরে গেলে এগিয়ে গিয়ে খাবার নেয়।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। প্রতিনিয়ত এই ভাইরাসে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ২৫ টি দেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে চীন সরকার। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যা দেখা দেয়।

আপনার মতামত লিখুন :