গলাচিপায় আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ইমামদের সাথে আস্থা প্রকল্পের সেমিনার

প্রকাশিত : ২ ডিসেম্বর ২০২০

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: “মসজিদে উচ্চারিত হবে নির্যাতন বিরোধী বাণী, এ-অবক্ষয় রুখতে আমাদেরই হতে হবে অগ্রগামী” এই চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সক্রিয় ভুমিকা রাখার অঙ্গিকার করলেন উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমামবৃন্দ। ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২০’ উদযাপন উপলক্ষে আস্থা প্রকল্পের উদ্যোগে পটুয়াখালীর গলাচিপায় বুধবার সকাল ১০ টায় উপজেলা হলরুমে ইমামদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হলো এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন। আস্থা প্রকল্পটি নেদারল্যান্ডস এম্বাসির অর্থায়নে, ইউএনএফপিএ ও আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সহযোগিতায় পটুয়াখালী জেলায় মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নে কাজ করছে সুশীলন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালারাজা আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও ইমাম সমিতির সভাপতি মাও. মো. মিজানুর রহমান।

আয়োজিত এ সভার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশীষ কুমার। এ সময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএ-এর ফিল্ড অফিসার মো. কামরুজ্জামান। আরও উপস্থিত ছিলেন গলাচিপা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সমিত কুমার দত্ত মলয়, ইউএনএফপিএ-এর ডিস্ট্রিক্ট ফেসিলিটেটর মো. শামিউল আলমসহ বিভিন্ন মসজিদের ইমামবৃন্দ, কাজীগণ, আইন ও শালিস কেন্দ্রের প্রোজেক্ট অফিসার হুমায়ুন কবিরসহ সুশীলন আস্থা প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন মো. কামরুজ্জামান। প্রকল্প সমন্বয়ক মোসা. হাসিনা পারভীন সভার মুল উদ্দেশ্য, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২০ এর থিম সহ প্রকল্পের বিভিন্ন কর্মসূচী তুলে ধরেন এবং প্রোজেক্ট অফিসার হুমায়ুন কবির আইন ও শালিস কেন্দ্র আস্থা প্রকল্পের উপর নির্মিত একটি প্রেজেন্টেশন সভায় উপস্থাপন করেন।

এ সময় প্রধান অতিথি আশীষ কুমার বলেন, ‘ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে সকলকে ভালোবাসতে হবে। কোন একটি মানুষকে আঘাত দিয়ে তাকে ভাল করা যায় না। তাকে বুঝিয়ে বলতে হবে। সবাইকে এই শিক্ষা দেয়া উচিত।’ বিশেষ অতিথি ইউএনএফপিএ-এর ডিস্ট্রিক্ট ফেসিলিটেটর মো. শামিউল আলম বলেন, আজকের সভার পরামর্শ অনুযায়ী সবাইকে এই সচেতনতামূলক কার্যক্রমকে চালু করতে হবে। এ সময় মসজিদের ইমামদের আলোচনা সুযোগ দেয়া হয়। এ সময় অংশগ্রহণকারীরা তাদের কথাগুলো তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, “এই আয়োজন একটা চমৎকার উদ্যোগ, এরকম আয়োজন সব ধরণের চ্যালেঞ্জকে অতিক্রম করতে শক্তি যোগাবে। আমরা আশা করব এ ধরণের কার্যক্রমে আরো বেশী ইমামদের সম্পৃক্ত করলে নারী নির্যাতনের এ ভয়াবহতাকে আমরা নির্মূল করতে পারব ইনশা আল্লাহ”।

তারা অঙ্গিকার করেন, জুমআ নামাজের খুতবায়, ওয়াজ মাহফিলে, যেকোনো সভা সমাবেশে নারী নির্যাতনের কুফল দিকগুলো তুলে ধরব এবং ধর্মে যে নারীদের সম্মান দিয়েছে তা তুলে ধরব। আমরা আশা করছি এ সমাজ থেকে নারী নির্যাতন বন্ধ হবে। আমাদেরকে আর নারী নির্যাতন পক্ষ উদযাপন করতে হবে না। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ধর্মীয় নেতাদের ভূমিকা বিষয়ক আলোচনা সভার উদ্দেশ্য ছিল নারী ও কন্যা শিশুদের নির্যাতনের মুখে ঠেলে দেয় এমন সব ক্ষতিকর সামাজিক প্রথা ও রীতিনীতির বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তুলতে জুমআর নামাজের খুতবাহসহ যেকোনো ধর্মীয় ও সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের প্রচারণায় ধর্মীয় নেতাদের উদ্বুদ্ধ করা। সেই সাথে সকল ধর্মে নারীর যে মর্যাদা নিশ্চিত হয়েছে তা যেন কোনভাবে ব্যাক্তি স্বার্থের কাছে বিনষ্ট না হয় সে বিষয়ে সকলকে আরো বেশী সোচ্চার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

 

আপনার মতামত লিখুন :