বিকাশের গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত : ৫ ডিসেম্বর ২০২০

আজ ৫ ডিসেম্বর ২০২০ইং শনিবার বেলা ১১.৩০ সেগুনবাগিচাস্থ ক্র্যাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন’র উদ্যোগে বিকাশের গ্রাহকদের অর্থ হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের দ্রুত গ্রেফতার, ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ ও বিকাশের আয়-ব্যয়ের অডিট প্রকাশের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন’র সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গাইডলাইনের ১২ ধারায় বলা আছে গ্রাহকদের নিরাপত্তা দেবার বিষয়ে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে সুনির্দিষ্টভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেয়া আছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে আমরা দীর্ঘদিন যাবত লক্ষ্য করছি যে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ৫ কোটি গ্রাহক নিয়ে বিকাশ সেবা প্রদান করল এ প্রতিষ্ঠানের সেবা গ্রহণকারী গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত অসাধু প্রতারকদের হাতে প্রতারিত হয়ে আসছে। এ প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পায়নি, সাংবাদিক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, থেকে শুরু করে অতি সাধারণ গ্রাহকরা। বিকাশ কর্তৃপক্ষ দায়সারা গোছের বিজ্ঞাপন প্রচার করেই ক্ষান্ত হচ্ছেন। আজ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ কোন গ্রাহক তার কাছ থেকে হাতে নেয়া অর্থ ফেরত পেয়েছে এমন নজির দেখা যায়নি। আমরা গ্রাহকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ার দায় বিকাশ কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে এড়াতে পারে না। সকল ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া অর্থ গ্রাহকদেরকে ফেরত দেবার জন্য বা ক্ষতিপূরণ প্রদান করার জন্য বিকাশ কর্তৃপক্ষ সহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এর প্রতি বিনীত আহবান জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, গত ২৯ নভেম্বর দৈনিক শেয়ার বিজ ও দৈনিক মানবকণ্ঠ সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় অস্বচ্ছ হিসেবের আড়ালে বিকাশ শিরোনামটি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। বিকাশ একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। তারা দেশের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান ও সর্বোচ্চ চার্জ নেওয়া স্বত্ত্বেও কেন তারা লোকসানে থাকবে বা তাদের নামে অস্বচ্ছ হিসাব শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হবে তা আমাদের বোধগম্য নয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনে ২য় পক্ষ নিয়োগের মাধ্যমে নিরপেক্ষ অডিট সম্পাদন করে তা গণমাধ্যমে প্রকাশের দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, কোটি কোটি গ্রাহক ঝুকিতে থাকবে এটা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শুধু গ্রাহকদেরকে সতর্ক করাই নয়, অপরাধীদেরকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাই। সেবা পাওয়ার সাথে সাথে গ্রাহকদের সুরক্ষা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে। বিকাশের ব্যবসা বাড়ছে কিন্তু মুনাফা কমছে বা লোকসান হচ্ছে এটা অস্বাভাবিক। গ্রাহক সুরক্ষায় রাষ্ট্রের নিজ উদ্যোগেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এসময় এড. মো.জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক লতিফ রানা, সাইফুল ইসলাম, মুকুল ইসলামসহ আরো কয়েকজন ভুক্তভোগী গ্রাহক বলেন, আমাদের অজান্তেই বিকাশের নাম বলে প্রতারকরা আমাদের ব্যালান্সের সমুদয় হাতিয়ে নিয়েছে। বিকাশ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। এমনকি থানায় জিডি করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কার্যনির্বাহী সদস্য এড. সাহিদা বেগম, বাংলাদেশ মোবাইল ফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী এসোসিয়েশনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলু প্রমুখ।

আপনার মতামত লিখুন :