রংপুরে রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা: পুলিশ সদস্য ও স্ত্রী গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ২৫ ডিসেম্বর ২০২০

রংপুরে পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে রিকশাচালক নাজমুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে এ মামলা দায়ের করেন। এরপর বৃহস্পতিবার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টা থেকে নগরীর পার্কের মোড়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সড়কে বিক্ষোভ করে স্থানীয় এলাকাবাসী ও অটোরিকশা শ্রমিকরা।

এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলীর শাস্তির দাবিতে ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামের স্ত্রী শ্যামলী বেগম ও স্থানীয়দের অভিযোগ, রংপুর পুলিশ সেন্টারে (পিটিআই) কর্মরত কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগম রিকশাচালক নাজমুলকে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করেছে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা। জানা গেছে, বুধবার সন্ধ্যায় কনস্টেবল হাসান আলীর আশরতপুর কোর্টপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে ওই রিকশাচালকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরে কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী। ঘটনার দিনই ওই পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে মহানগর পুলিশের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান প্রধান বলেন, এ ঘটনায় কনস্টেবল হাসান ও স্ত্রী সাথীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ২টায় আসামিদের আদালতে নেয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম জানান, বেলা সোয়া ২টার দিকে আসামিদের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফজলে ইলাহী খানের আদালতে নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, নিহত রিকশাচালক নাজমুল হোসেন লালমনিরহাটের মুস্তফির অতিপুর এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। রংপুরে আশরতপুর ঈদগাপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রংপুর পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত হাসান আলী। তিনিও ওই এলাকার কোর্টপাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করেন। নাজমুল দীর্ঘদিন থেকে হাসান আলীর ব্যক্তিগত একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন। মঙ্গলবার রাতে ওই রিকশা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ সৃষ্টি হয়।

এরই জেরে তাকে বেধড়ক মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। এ দিকে বুধবার বিকেলে হাসানের ভাড়া বাসায় প্রতিবন্ধী নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ শুরু করেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে পুলিশ কনস্টবল।

 

আপনার মতামত লিখুন :