কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। হাড়াকাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্থ জনজীবন। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে অসহায় হতদরিদ্র মানুষ ঘরে থেকে বের হতে পারছেনা। এর মধ্যেও পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থার পাথওয়ে’র স্বেচ্ছাসেবীরা বসে নেই। গত দু’দিন ধরে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের সাগরের মোহনায় রাবনাবদ নদী সংলগø এলাকায় অসহায় দরিদ্র শীতার্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিয়েছে তারা। এ কর্যক্রমে পাথওয়ে’র নির্বাহী পরিচালক মো.শাহিন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার, ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল, শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন ও মো.বাসেদুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
পাথওয়ে’র সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার মহিপুর কো-অপারেটিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বুধবার দুপুরে জেলে, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজরা) ও অসহায় হতদরিদ্র দুই শতাধীক শীতার্থ পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরন করা হয়েছে। এর আগের দিন রাতে লতাচাপলী ইউনিয়নের গোড়া আমখোলা পাড়ায় রাখাইন পল্লীর প্রতিটি পরিবারের মাঝে একটি করে কম্বল ও মাস্ক বিতরণ হয়। এছাড়া একটি কেরাতুল হাফিজিয়া মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীদের হাতে কম্বল তুলে দেয়া হয়েছে। সর্ব শেষ গত দু’দিন ধরে চম্পাপুর ইউনিয়নের সাগরের মোহনায় রাবনাবদ নদী সংলগø পাটুয়া, গোলবুনিয়া ও মাছুয়াখালী এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শীতবস্ত্র পৌঁছে দিয়েছে পাথওয়ে’র সেচ্ছাসেবী কর্মীরা। তীব্র শীতে হাতে শীতবস্ত্র পেয়ে খুশি সহায়-সম্বলহীন মানুষরা।
চম্পাপুর ইউনিয়ন গোলবুনিয় গ্রামের ষাটোর্ধের বৃদ্ধ আবুল প্যাদা বলেন, ঘরের বাইরে ঠান্ডা বাতাস। এই শীতে মোনে হয় মইরা যামু। কেউ মোগো খবর নেয় না। তবে সে হাতে কম্বল পেয়ে খুব খুশি। একই এলাকার মরিয়ম বিবির বাড়ি গিয়ে পাথওয়ের সেচ্ছাসেবী কর্মী তার হাতে একটি কম্বল তুলে দেয়। এসময় তিনি বলেন, নদীর পাড়ে থাহি, বেড়ার ফাক দিয়া বাহাত ঢোকে। রাইতে খাতা প্যাচাইয়া থাকতে হয়। এ্যাহন এই কোম্বলডা গায় দিয়া থাকতে পারমু। চম্পাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিন্টু তালুকদার বলেন, এ কার্যক্রমের জন্য প্রথমে বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা পাথওয়েকে ধন্যবাদ জানাই। শীত নিবারণ করার সম্বলটুকুও যাদের নেই তাদের পাশে দাড়িয়েছে। আর প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরিবারের হাতে শীতবস্ত্র তুলে দিয়েছেন তারা।
পাথওয়ে’র নির্বাহী পরিচালক মো.শাহিন বলেন, পাথওয়ে একটি বে-সরকারী উন্নয়ন সংস্থা। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত গণমাধ্যম কর্মীদের ফ্রী এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করে ছিলাম। এছাড়া করোনা আক্রান্ত রোগীর হাসপাতালে যাতায়াতের জন্য বিনামূল্যের পরিবহন সেবাসহ মৃতদের লাশ দাফন কাজ করেছে পাথওয়ে। পাথওয়ে সংকটাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ায়। তাই এ শীতে এ উপজেলার জেলে, তৃতীয় লিঙ্গ (হিজরা),অসহায় হতদরিদ্র ও মাদ্রাসায় পড়ুয়া শিশু শিক্ষার্থীদের মাঝে এক হাজার কম্বল বিতরন করা হয়েছে। তবে এ কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।