আজ জাতীয় কবির ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট ২০২১

আজ ১২ ভাদ্র, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের এদিন মারা যান জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছিলেন কবি, সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক। দারিদ্র্যের কারণে মাত্র ১০ বছর বয়সেই পরিবারের ভার বহন করতে হয়েছে তাকে।

‘বিদ্রোহী’ কবি হিসেবে ব্যাপক পরিচিত হলেও তিনি গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। সংগীতজ্ঞ হিসেবেও তিনি খ্যাতির শিখরে উঠেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা, গান ও অন্য রচনা শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে। বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধে তাঁর গান ও কবিতা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী জনগণের প্রেরণার উৎস ছিল। তাঁর লেখা ‘চল চল চল’ গানটি বাংলাদেশের রণসংগীত।

১৯৭২ সালের ২৪ মে স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারত সরকারের অনুমতি নিয়ে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। তাকে দেয়া হয় জাতীয় কবির মর্যাদা। বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কবিকে সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেয়। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি একুশে পদকে ভূষিত করা হয় কবিকে।

জাতি আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে এ কবিকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত কবির সমাধি ছেয়ে যাবে ফুলে ফুলে।

কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুনের অভাব-অনটনের সংসারে জন্ম নিয়ে ‘দুখু মিয়া’ সারা জীবন দুঃখমোচনের সংগ্রাম করেছেন। কোনো প্রতিকূলতা কিংবা লোভ-লালসার কাছে মাথা নত করেননি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্যোগ নিয়ে ১৯৭২ সালের ২৪ মে সপরিবারে অসুস্থ কবিকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। কবি পরিবারের জন্য ধানমন্ডিতে একটি বাড়ি দেওয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবির বাকি জীবন ঢাকায় কাটে। একটি গানে কবি ‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই’ বলে আকুতি প্রকাশ করেছেন। মৃত্যুর পর তাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়।

কর্মসূচি: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাদ ফজর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়া’য় কোরানখানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সকল কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।

কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে, সকাল সোয়া ৭টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা সহকারে কবির সমাধিতে গমন, পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করা হবে। সকাল সাড়ে ১০ টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আলোচনা সভায় নজরুল বিশেষজ্ঞ হিসেবে জাতীয় অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখবেন।

আপনার মতামত লিখুন :