কুমিল্লায় কোরআন অবমাননা ও সহিংসতার ঘটনায় ৪ মামলা

প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর ২০২১

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা ও শহরের বিভিন্ন পূজামন্ডপে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে চারটি মামলা করেছেন। কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় এ চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই চারটি মামলায় পৃথকভাবে দুই উপ পরিদর্শক (এসআই) বাদি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ জানান, বুধবারের ঘটনায় ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত, তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে এবং সহিংসতার ঘটনার অভিযোগে মোট চারটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই চারটি মামলায় এ পর্যন্ত ৪১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে কেউ সহিংসতার সৃষ্টি করতে না পারে এই জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানিয়ে এদিকে সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, এই মামলা গুলোতে ঘটনায় জড়িতদেরই আইনের আওতায় আনা হবে। তবে কোন নিরিহ ব্যক্তি যাতে হয়রানি না হয়ে, সেই দিকে খেয়াল রাখবে প্রশাসন। সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার স্থানীয়র সরকার উপ-পরিচালক শওকত ওসমানসহ স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা। এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিতে সদস্যরা হচ্ছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সায়েদুল আরেফিন, সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম তানভীর আহমেদ ও কুমিল্লা সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন।জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান জানান, গঠিত এই তদন্ত কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে বৃহস্পতিবার থেকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিবেন।

উল্লখ্য, মঙ্গলবার খুব ভোরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর আসে যে নগরীর নানুয়ার দীঘির পূজামণাডপের ভেতরে প্রতিমার পায়ের কাছে একটি কোরআন রাখা আছে। খবর পেয়েই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ সেখান থেকে কোরআন নিয়ে আসেন। কিন্তু দশটা নাগাদ একটি ছবি ব্যাপক ভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে থাকে যেখানে দেখা যায় প্রতিমার হাঁটুর কাছে কোরআন। অনেকে এটি দিয়ে নানা ধরণের লাইভ বক্তব্য দিয়ে কোরআন অবমাননার অভিযোগ করতে থাকেন।

স্থানীয়রা জানান বেলা এগারটার দিকে হঠাৎ কোরআন অবমাননা হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে। সকালে নানুয়ারদীঘির মন্ডপে কোরআন নজরে পড়লে দ্রুত পুলিশকে জানানো হয় এবং পুলিশ তখনি এসে কোরআনটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়ানো হয় এবং কয়েকটি মাদ্রাসার লোকজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন চেষ্টা চালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মন্ডপ গুলোতে হামলা করা শুরু হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।

এদিকে ঘটনার পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোরআন অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে ব্যাপক প্রচার শুরু হয় এবং অনেকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনেকে ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :