আমতলীতে বিনা নোটিশে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে স্ব-মিল, মুরগীর ফার্ম ও পানের বরজ

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর ২০২১

মাইনুল ইসলাম রাজু, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া গ্রামের ষোল হাওলাদার এলাকায় বিরোধীয় জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মামলায় আদালতের নির্দেশে ও বিনা নোটিশে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে মোঃ জামাল হাওলাদার নামে এক বর্গা চাষীর স্বমিল, মুরগীর ফার্ম ও পানের বরজ। এতে বর্গা চাষী সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে গেছে। এতে তার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ভূক্তভোগী দাবী করেন।

ভূক্তভোগী ও স্থাণীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া মৌজার হাল এসএ ৩১৬ নং খতিয়ানের ৯১৮, ৯৬৬ ও ৯৬৮নং দাগ থেকে ১ একর ১০ শতাংশ জমি একই এলাকার বর্গাচাষী স্থাণীয় নূরুল ইসলাম হাওলাদারের পুত্র মোঃ জামাল হাওলাদার ওই জমির তৎকালিন মালিক আঃ রশিদ মাস্টার ও মোঃ কবির মিয়া গংদের কাছ থেকে বাৎসরিক ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে ভাড়া নেয়।

গত ১৫ বছর পর্যন্ত বর্গাচাষী ওই জমিতে ১টি স্ব-মিল, ২টি বয়লার মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ নির্মাণ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। কিন্তু ওই জমি নিয়ে সোনাবরু গংদের সাথে মোঃ আউয়াল হাওলাদার গংদের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। যা আদালতে পর্যন্ত গড়িয়েছে। ওই মামলায় আদালত থেকে এক পক্ষকে (সোনাবরু বিবি গংদের) চুরান্ত ডিগ্রী দিয়ে জমি বুঝিয়ে দিতে গিয়ে ওই জমির উপরোক্ত দাগে ভোগ দখলে থাকা ভাড়াটিয়া বর্গাচাষী মোঃ জামালকে কোন প্রকার নোটিশ বা মৌখিকভাবে স্থাপনা সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়নি বলে ভূক্তভোগী অভিযোগ করেন।

গতকাল (২০ নভেম্বর) সকালে সহকারী জজ আদালত (আমতলী) বরগুনা, থেকে নাজির মোঃ ফারুক আহম্মেদ গিয়ে চুরান্ত ডিগ্রীদারকে (সোনাবরু গংদের) জমি বুঝিয়ে দেয়। এসময় পুলিশের সহায়তায় ভাড়াটিয়া বর্গাচাষী মোঃ জামালের ওই জমিতে থাকা ১টি স্ব-মিল, ২টি বয়লার মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে লাল নিশান টানিয়ে দেয়া হয়। এতে ওই বর্গাচাষী জামাল সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসে গেছেন। এতে তার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগী ওই বর্গাচাষী মোঃ জামাল মিয়া কান্না কণ্ঠে বলেন, ভাড়া নেওয়া ওই জমিতে থাকা আমার ১টি স্ব-মিল, ২টি বয়লার মুরগীর ফার্ম ও ৮টি পানের বরজ কোর্টের আদেশে বীনা নোটিশে ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। আমি এতে সর্বস্ব হারিয়ে পথের ফকির হয়ে গেলাম। এতে আমার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বিবাদী মোঃ আউয়াল হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন, আমরা আদালতের দেয়া কোন নোটিশ পাইনি।

সহকারী জজ আদালত (আমতলী) বরগুনা, নাজির মোঃ ফারুক আহম্মেদ মুঠোফোনে বলেন, আদালতে নির্দেশে আমি চুরান্ত ডিগ্রীদারকে (সোনাবরু বিবি গংদের) জমি বুঝিয়ে দিয়ে লাল নিশান টানিয়ে দিয়েছি। বীনা নোটিশে স্থাপনা কেন ভাঙ্গছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বর্গাচাষী কোন নোটিশ পাবেন না। এ মামলায় যারা বিবাদী তারা বিষয়টি জেনেছেন এবং নোটিশও পেয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :