শ্রমিকদের অধিকার সর্বোচ্চ মানবাধিকার

প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০২১

আজ ১০ ডিসেম্বর ২০২১ইং রোজ শুক্রবার সকাল ১১:০০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের উদ্যোগে মানববন্ধন ও সাদা পতাকা র‌্যালী অনুষ্ঠিত।

মানববন্ধনে ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের সভাপতি সুলতানা বেগম এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইলিয়াস, যুগ্ম সম্পাদক খাদিজা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রোজিনা আক্তার সুমি, প্রচার সম্পাদক মোঃ তাহেরুল ইসলাম, সংগঠক রাবেয়া ইসলাম, সেলিনা হোসাইন, কল্পনা, রোকসানা, সুমন হোসেন, মোঃ ওমর ফারুক, আব্দুর রউফ, রিনা প্রমুখ।

মানববন্ধনে সংহতি বক্তব্য রাখেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসাইন, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট মুনাজ সুলতানা মুন্নী।

সভাপতির বক্তব্যে সুলতানা বেগম বলেন শ্রমিকের অধিকার সর্বোচ্চ মানবাধিকার। প্রত্যেকেরই জীবন, স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তার অধিকার রয়েছে। মানবাধিকার বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করার জন্য নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হলেই হবে না, অন্যের অধিকারকেও সম্মান করতে হবে। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার হলেও শ্রমিক-কর্মচারীরা অনেক ক্ষেত্রে সে অধিকার থেকে বঞ্চিত। সকল শ্রমিকের কাজের নিশ্চয়তা, সম-কাজে সম-মজুরী, প্রাতিষ্ঠানিক-অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬মাস, সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশ, নিরাপদ কর্মস্থল, সামাজিক নিরাপত্তা, ব্যক্তি মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠানে আইনগত বাঁধা না থাকলেও ছলে, বলে কৌশলে শ্রমিক-কর্মচারীদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার দেয়া হচ্ছে না।

শ্রমিক-কর্মচারীদের ন্যায় সঙ্গত আন্দোলন দমন করতে হামলা নির্যাতনের পাশাপাশি গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন সেক্টরে শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা, হয়রানি বা চাকুরীচ্যুত করা হচ্ছে। শ্রমিকদের প্রতি অনাস্থা নয় বরং আস্থা নিয়েই শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ সম্ভব। শুধু উপযুক্ত পদক্ষেপই মানবাধিকারকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে এবং সম্পূর্ণ উত্তরণকে নিশ্চিত করতে পারে এবং সর্বোপরি আরো উন্নত, স্বাভাবিক, ন্যায্য এবং টেকসই বিশ্ব গড়ায় ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে আমাদের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মানবাধিকার সুরক্ষিত করার জন্য একটি কভিড-পরবর্তী বিশ্ব গড়তে নিজ নিজ ভূমিকা পালন করতে হবে।

মানবাধিকার হচ্ছে প্রত্যেকটি মানুষের জন্মগত অধিকার। জন্মগতভাবে সকল মানুষ স্বাধীন এবং সমান সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী। মানবাধিকার সব জায়গায় এবং সবার জন্য, এ অধিকার তার আইনগত অধিকার। প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সকল মানুষ সমান, সবার জন্য মানবাধিকার’। পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম মানবিক বিপর্যয়ের বছর ২০২১ সাল। মহামারী কোভিড-১৯, মানবাধিকারকে এক নতুন এবং কঠিন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করেছে; করোনা মোকাবেলার সকল প্রচেষ্টার মূল কেন্দ্রবিন্দু মানবাধিকার সুরক্ষা। মানবাধিকার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মূল দায়িত্ব রাষ্ট্র বা সরকারের।

করোনাকালেও নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ ও হামলার ঘটনা ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। প্রতিনিয়ত কর্মস্থলে যাতায়াতসহ বিভিন্ন সময় নারীরা যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তি করে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি নিশ্চিতসহ আইএলও কনভেশন ১০২, ১৮৯ ও ১৯০ অনুস্বাক্ষর করা প্রয়োজন।

 

আপনার মতামত লিখুন :