ঐ নারী আশিকের পূর্ব পরিচিত ছিলেন না

প্রকাশিত : ২৯ ডিসেম্বর ২০২১

জন্মগতভাবে হার্টে ছিদ্র আট মাসের শিশুর। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে চিকিৎসার অর্থ যোগাতে স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারে যান ঐ নারী। সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের কাছ থেকে অর্থ জোগাড় করছিলেন তারা। বিষয়টি জেনে তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে গ্রেফতার আশিকুর রহমান আশিকসহ সংঘবদ্ধ চক্র। টাকা না পেয়ে তাদের সুগন্ধা বিচ থেকে জিম্মি করে সিএনজিতে একটি চায়ের দোকানে নেয়া হয়। সেখান থেকে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে নিয়ে মূলহোতা আশিকসহ চক্রের সদস্যরা ঐ নারীকে ধর্ষণ করেন।

সোমবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঐ নারী চক্রের পূর্ব পরিচিত ছিল না। ঘটনার একদিন আগে বিচে তাদের পরিচয় হয়। সে সময় ঐ নারী শিশু সন্তানের চিকিৎসার জন্য পর্যটকদের কাছে অর্থ সহযোগিতা চাইছিল। ঐ সময় আশিকদের নজরে পড়েন ঐ নারী। বিষয়টি জেনে ঐ নারী কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন আশিক। চাঁদার টাকা না পেয়ে তাকে সুগন্ধা সৈকত থেকে জিম্মি করে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে নেয়া হয় একটি চায়ের দোকানে। সেখান থেকে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে নিয়ে সৈকত এলাকার আশিকসহ অপরাধী চক্রের সদস্যরা ঐ নারীকে ধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় ২২ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজারে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার ঐ নারীর স্বামী বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। কক্সবাজারে নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় প্রধান আসামি আশিককে মাদারীপুর থেকে গতকাল রোববার রাতে গ্রেফতার করা হয় বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় র‌্যাব।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার আল মঈন বলেন, নারীকে অপহরণের পর তার স্বামী র‌্যাব–১৫ এর কাছে উদ্ধারে সহায়তা চান। র‌্যাব তার স্বামীকে নিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে ওই নারীকে উদ্ধার করা হয়। পরে ২৩ ডিসেম্বর রাতে জিম্মি করার সহযোগিতার অভিযোগে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

কমান্ডার মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আশিক র‌্যাবের কাছে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। আশিক কক্সবাজারে পর্যটন এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র চালান। এ চক্রের সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে ৩৫। ২০১২ সাল থেকে কক্সবাজার পর্যটন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত আশিক। তিনি প্রথম ২০১৪ সালে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হয়েছিলেন।

র‌্যাব আরো জানায়, ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন আশিক। তার নামে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন, চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা আছে। পাঁচবার পুলিশ আশিককে গ্রেফতার করেছে। আশিকের নেতৃত্বে চক্রটি পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত। আশিক বিভিন্ন হোটেলে ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে যোগসাজশে পর্যটকদের বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করতেন। এক পুলিশ সদস্যকেও ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেল করেন তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :