আমতলী কুতুবপুর ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করে অধ্যক্ষ নিয়োগের পায়তারা!


প্রকাশিত : ১৫ জানুয়ারি ২০২২

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসায় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল করে এবং তাকে না জানিয়ে অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে কারসাজি করে গোপনে অধ্যক্ষ নিয়োগের পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জালিয়াতির এ বিষয়টি উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুতুবপুর ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ গোলাম মোস্তফা ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসরে যান। তার অবসরের পরে দায়িত্ব দেওয়া হয় ওই প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক মোঃ দেলোয়ার হোনেকে। তিনি শারীরিক অসুস্থ্যতার কারনে দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা মোঃ ছাইদুর রহমানকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

অভিযোগ রয়েছে, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রদান করলেও সাবেক অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন ও ছাইদুর রহমানকে কোন কাগজপত্র বুঝিয়ে না দিয়ে সকল কাগজপত্র তার নিজের নিকট রেখে দেন। নিজের কাছে কাগজপত্র রাখার সুবাদে অবসরে যাওয়া অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা গোপনে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এবং বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ ছাইদুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে অধ্যক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তির তারিখ অনুযায়ী আজ শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় নিয়োগ পরীক্ষার সময় নির্ধারন করেন। এসময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছাইদুর রহমানসহ মাদরাসার অন্যান্য শিক্ষকরা অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি জানতে পারেন। স্বাক্ষর জাল করে এবং গোপন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি জানার পর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ ছাইদুর রহমান নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য আজ (শুক্রবার) সকালে বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

কুতুবপুর ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার শিক্ষক প্রতিনিধি এবং নিয়োগ বোর্ডের সদস্য মোঃ জাহিদুল ইসলাম শামীম জানান, অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়ে আমিসহ মাদরাসার কোন শিক্ষকই কিছুই জানে না। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ ছাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা কারসাজি করে আমার স্বাক্ষর জাল করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে গোপনে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অধ্যক্ষ নিয়েগের আয়োজন করেছে। নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধ এবং আমার স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি।

অভিযুক্ত সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ গোলাম মোস্তফা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এখন আর ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ নই। মাদরাসায় অধ্যক্ষ না থাকলে সে কিভাবে আরেক জনকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয় এটা আমার জানা নেই। আমার বিষয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ন মিথ্যা এবং বানোয়াট।

মাদরাসা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এমএ কাদের মিয়া বলেন, মাদরাসায় একজন উপাধ্যক্ষ রয়েছে। সকল নিয়মনীতি অনুসরন করে অধ্যক্ষ নিয়োগ করা হবে। তবে আপাতত অধ্যক্ষ নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করা হয়েছে। বরগুনার জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, অফিস বন্ধ থাকায় অভিযোগ এখনো আমি হাতে পাইনি। অভিযোগ পেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :

এই বিভাগের সর্বশেষ