যে কারণে ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যা করলো নায়ক রিয়াজের শ্বশুর

প্রকাশিত : ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২

চিত্রনায়ক রিয়াজের শ্বশুর আত্মহত্যা করেছেন। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন। তার নাম আবু মহসিন খান। তিনি পেশায় ছিলেন ব্যবসায়ী। তবে ক্যানসারে আক্রান্ত মহসিনের ব্যবসা এখন বন্ধ বলে জানান। বুধবার রাত ৯টার দিকে ধানমন্ডি ৭ নম্বর সড়কে একটি বাড়ির ষষ্ঠতলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনাটি ঘটে। খবর শুনে রিয়াজ ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও সেখানে যান। মাথায় গুলি করার আগে ফেসবুক লাইভে তিনি বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা, পরিবার নিয়ে হতাশার কথা বলেন।

এক নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে দুঃখও প্রকাশ করেন তিনি। নিজের নিঃসঙ্গতার কথা বলতে গিয়ে মহসিন বলেন, ‘আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমার ভয় করে যে আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না। ব্যবসা করতে গিয়ে টাকা দিয়ে ঠকার কথাও জানান মহসিন। তিনি বলেন, ‘যাদের জন্য আমি বেশি করেছি, তাদের কাছ থেকেই আমি প্রতারিত হয়েছি। আমার এক বন্ধু ছিল বাবুল, যাকে আমি নিজে না খেয়ে খাইয়েছি। সে আমার প্রায় ২৩ থেকে ২৫ লাখ টাকা মেরে দিয়েছে। এভাবে আমি বিভিন্ন মানুষের কাছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো পাই।

‘সবশেষ আমি নোবেল নামে একজনকে বিশ্বাস করি। যাকে আমি মিনারেল ওয়াটার প্ল্যান্টের দায়িত্ব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুই বছরেও সেই প্ল্যান্টের যন্ত্র সে কেনেনি। পরে তার কাছে টাকা ফেরত চাইলে, ঝগড়া হয়। এরপর সে দুই দফায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা সে আমাকে দিচ্ছে না। মানুষ কেন এতো লোভী হয়? নিজের উপার্জন, সন্তানদের বড় করার কথা তুলে ধরে মহসিন বলেন, ‘প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামিলিকে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামিলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা সবাই ভালো থাকবেন।

এরপর কালেমা পড়তে পড়তে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন মহসিন। তার আগে পিস্তলের লাইসেন্স দেখান। তিনি বলেন, আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি, সেটি ইলিগাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। এর আগে ছেলে মেয়ের কাছে দুঃখও প্রকাশ করেন মহসিন। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মিয়া বলেন, ‘নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :