ছিনতাইকারী সন্দেহে আটক তিন পুলিশ সদস্য ক্লোজড

প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের ছিনতাইকারী সন্দেহে স্থানীয় জনতার হাতে আটক হয়েছেন সোনাগাজী মডেল থানার তিন পুলিশ সদস্য। পরে তাদের ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। মুছাপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড ছোটধলি গ্রামে রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আটক পুলিশ সদস্যরা হলেন সোনাগাজী মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জহিরুল হক, আদর্শগ্রাম তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল কাওছার ও আনোয়ার হোসেন।

ছোটধলি গ্রামের চৌরাস্তার ব্যবসায়ী শেখ ফরিদ অভিযোগ করেন, ‘রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে তিন পুলিশ সদস্য সিএনজিযোগে এসে আমার গতিরোধ করে। এ সময় তল্লাশির করার নামে তিনটি পকেটে থাকা ৪৮ হাজার ৬০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। টাকা ফেরত চাইলে ইয়াবা ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে সিএনজিতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করে। তখন আমি চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে টাকা উদ্ধার করে। ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আইয়ুব আলী।

তিনি বলেন, ‘ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড ছোটধলি গ্রামে রাতে তিন পুলিশ সদস্যকে আটকের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের সদস্যরা ব্যবসায়ীর কাছে থেকে দেড় লাখ টাকার বান্ডিল ছিনিয়ে নেয়। ওই টাকা উদ্ধার করে ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়েছি। ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সোনাগাজী মডেল থানার ওসি ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি। স্থানীয়রা জানান, চর ইঞ্জুমান গ্রাম সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়নের অন্তর্গত হলেও ভৌগোলিক অবস্থান নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নে। সোনাগাজীর পুলিশ সদস্যদের চর ইঞ্জুমানে যেতে হলে মুছাপুরের ছোটধলি গ্রামের ওপর দিয়ে যেতে হয়।

রবিবার রাতের ঘটনাটির স্থান সোনাগাজী ও কোম্পানীগঞ্জের সীমানা এলাকায়। অভিযোগ রয়েছে, প্রায়ই সোনাগাজী মডেল থানার পুলিশের সঙ্গে ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে।

তবে ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মো. সাজেদুল ইসলাম পলাশ। তিনি বলেন, ‘ছিনতাইয়ের কোন ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ সদস্যরা চরদরবেশ ইউনিয়নের চর ইঞ্জুমান গ্রামে টহলে যাওয়ার সময় ছোটধলি গ্রামের দোকানের সামনে শেখ ফরিদকে একা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তল্লাশি করেন। এ সময় সে ভয়ে চিৎকার দিলে স্থানীয় এলাকাবাসী পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে রাখে। পরে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনার পর ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়।

তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী সার্কেল) মাশকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ফেনীর পুলিশ সুপার মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আপনার মতামত লিখুন :