ময়মনসিংহে বড় ভাইয়ের পরকীয়ার জেরে খুন হন কিশোর সাজিদ

প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২২

ময়মনসিংহের নান্দাইলে বড় ভাইয়ের পরকীয়ার কারণে ছোট ভাইয়ের খুন হওয়ার চাঞ্চল্যকর রহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। নান্দাইলের রহিমপুর (জাহাঙ্গীরপুর) গ্রামের মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে মাহফুজুর রহমান সাজিদকে (১৫) তার নিজ বসতঘরে গত ২৬ মার্চ রাতে ছুরিকাঘাত করে গলাকেটে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় নিহতের মা ইয়াসমিন আক্তার গত সোমবার নান্দাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এই হত্যা মামলার দায়িত্ব পায় ডিবি পুলিশ। তারা নানা কৌশল অবলম্বন এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে মামলার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও হত্যাকারীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তদন্তে, বড় ভাইয়ের পরকীয়ার কারণে ছোট ভাইকে খুন করা হয়েছে বলে জানতে পারে ডিবি পুলিশ। বুধবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি এসব তথ্য জানান।

মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। গ্রেপ্তাররা হলেন, কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের মো. হান্নান ও নান্দাইলের মো. আরমান। তারা হত্যাকাণ্ডের কারণ ও বিবরণ দিয়ে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। পরবর্তীতে গ্রেপ্তারদের তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি ও আসামিদের পরিহিত রক্তমাখা জামা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে হত্যার কারণ সম্পর্কে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, আসামি হান্নান গাজীপুরের ভবানীপুরে সস্ত্রীক বসবাস করত। হান্নান ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতে না পেরে তার তিন সন্তানের জননী স্ত্রী রুনা বেগম গার্মেন্টস শ্রমিকের চাকরি নেয়।

এদিকে হত্যাকাণ্ডে শিকার নিহত সাজিদের বড় ভাই রবিউল আওয়াল শুভ (১৮) ও হান্নানের স্ত্রী গার্মেন্টসে কাজ করার সুবাদে তাদের মাঝে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রুনা বেগম প্রায় ৪/৫ মাস আগে প্রেমের টানে দুই সন্তানকে স্বামীর ঘরে ফেলে রবিউল আওয়াল শুভর সঙ্গে পালিয়ে যায় এবং বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করে।

পরে, ২০ বছরের সংসার জীবনে স্ত্রী ও সংসার হারা হান্নান দিশেহারা হয়ে গাজীপুর এলাকা ছেড়ে সুনামগঞ্জ বিশ্বম্ভরপুর এলাকায় বসবাস শুরু করেন। এবং রবিউল আওয়াল শুভ কিংবা তার পরিবারে অন্য কাউকে হত্যার মধ্য দিয়ে প্রতিশোধ নিতে পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ২৬ মার্চ হান্নান তার মামাতো ভাই অপর আসামি আরমানকে সঙ্গে নিয়ে শুভর বাড়িতে আসে। বাড়িতে শুভকে না পেয়ে তার ছোট ভাই সাজিদকে একা পেয়ে হান্নান ও আরমান ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত ও গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ডিবির ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, এটি একটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হত্যাকাণ্ড ছিল। পুলিশ সুপারের পরিকল্পনামতো, টিম ওয়ার্ক কাজ করে অতি অল্পসময়ে রহস্য উদ্‌ঘাটন ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। গ্রেপ্তারদের বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :