করি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ৫

প্রকাশিত : ১৯ এপ্রিল ২০২২

গ্রামের সহজ সরল যুবক-যুবতীদের টার্গেট করতো একটি চক্র। পরে তাদেরকে সরকারি দপ্তরে বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা হাতিয়ে নিতো এই চক্রটি। রাজধানীর শেরেবাংলানগর এলাকা থেকে সচিব পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-২।

র‌্যাবের ভাষ্য মতে, ইদানিং সংঘবদ্ধ কয়েকটি প্রতারক চক্র সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অভিনব কৌশলে নিয়োগের বিভিন্ন প্রক্রিয়া, যেমন- সাক্ষাৎকার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিয়োগপত্র, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সম্পন্ন করে গ্রামের সহজ সরল চাকরিপ্রত্যাশী যুবক-যুবতীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

মঙ্গলবার দুপুরে র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ঢাকাটাইমসকে বলেন, তারা প্রত্যেক চাকরি প্রত্যাশীর কাছে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে। এভাবে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে অফিস খুলে সেখানে বিভিন্ন পদে চাকরি নিয়োগের কথা বলে অসংখ্য লোকের কাছ থেকে নগদ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে শেরেবাংলানগর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ভবিষ্যতে এরূপ প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-২ এর অভিযান অব্যাহত থাকবে।

র‌্যাব জানায়, বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী তথ্য প্রমাণসহ র‌্যাব-২ এর দপ্তরে অভিযোগ করেন। পরে র‌্যাব-২ এর গোয়েন্দা দল বিষয়টি আমলে নিয়ে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করে। তখন র‌্যাব জানতে পারে, রাজধানীর শেরেবাংলানগর ও এর আশেপাশের এলাকায় কিছু প্রতারক চক্র বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে গ্রামের নিরীহ লোকদের টাকার বিনিময়ে সরকারি-বেসরকারি অফিসে চাকরি প্রলোভন দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

র‌্যাব-২ এর একটি দল সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শেরেবাংলানগর খামারবাড়ী এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে মো. শিবলু নোমান চৌধুরী, মো. আমীর হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. জিল্লুর রহমান ও মো. মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তারা সবাই প্রতারক চক্রের সদস্য।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া যোগদান সংক্রান্ত অফিস আদেশ, সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ‘পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প’ লেখা খাম, সেনাবাহিনী লেখা জাল পরিচয়পত্র দুটি এবং প্রতরাণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল সেট পাঁচটি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বরাত দিয়ে র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. ফজলুল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র তৈরি করে ভুয়া নিয়োগ বাণিজ্যের অফিস খুলে বিজ্ঞাপন দিতো। পরে গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত ও বেকার যুবক-যুবতীদের উচ্চ বেতনে চাকরি দেওয়ার লোভ দেখাতো।

গ্রেপ্তার শিবলু নোমান চৌধুরী ওই ভুঁইফোর প্রতিষ্ঠানের এমডি বা সচিব সেজে নিরীহ চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করত।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে শিবলু নোয়াখালী জেলার মো. দলিলুর রহমানের ছেলে, মো. আমীর হোসেন ঝালকাঠি জেলার মৃত তৈয়ব আলী মোল্লার ছেলে, মো. রফিকুল ইসলাম বগুড়া জেলার মৃত সাদেক আলীর ছেলে, মো. জিল্লুর রহমান নওগাঁ জেলার মো. হাবিবুর রহমানের ছেলে এবং মো. মনির হোসেন গাইবান্ধা জেলার মো. আব্দুল গফুর সরদারের ছেলে।

আপনার মতামত লিখুন :