করোনাভাইরাস প্রযুক্তির কুফল : সাইদুর রহমান

প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০২০

বর্তমানে বিশ্বে একটা অটম বোমা। বিশ্বায়নের ফলে প্রযুক্তির অযৌক্তিক ব্যবহারে পরিবেশ আজ সংকটাপন্ন। বিশ্বের উন্নত দেশ গুলির শিল্পায়নের যাঁতা কলে পিষ্ট হয়ে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ । শিল্পে অধিক পরিমাণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে । এই পরিবেশ যদি আমাদের অবহেলার কারনে বাসের অযোগ্য হয়। যে কোন প্রযুক্তিনির্ভর বোমার মরণ ছোবলে সমস্ত প্রানীকূল ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে রক্তপাতহীন অর্থনেতিক যুদ্ধ করে কি লাভ হবে ? প্রতিটি প্রাণীকুল বেঁচে থাকার জন্য, বাসযোগ্য পরিবেশের দাবী কোন সৌখিন দাবী নয়। বর্তমানে বিশ্বের উন্নত দেশ গুলো সামরিক অস্ত্রে শক্তিশালী হওয়ার একটা অদম্য প্রতিযোগীতায় মেতেছে। কেউ তৈরী করেছে পারমাণবিক বোমা, কেউ নিউক্লিয়াম বোমা, কেউ বা পৃথিবীর সমস্ত প্রাণীকুল এক সাথে ধ্বংসের জন্য তৈরী করেছে জীবাণু অস্ত্র। পৃথিবীতে লক্ষ লক্ষ মানুষ অনাহারে মারা যাচ্ছে সেদিকে নজর নেই। অথচ জীবন বিনাশকারী বোমা তৈরীতে উন্নত রাষ্ট্র গুলোর আগ্রহের কোন কমতি নেই।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। যারফলে ক্ষতিকর জীবাণু অথবা ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি গুলো বায়ুমণ্ডল স্বাধীন ভাবে বিচরণ করতেছে। বায়ুমণ্ডল পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার কারনে অতিবেগুনি রশ্মি গুলোকে শোষণ বা শাসনে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারতেছে না। পরিবেশ তার নিজস্ব ক্ষমতাবলে অনেক ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারে কিন্তু বর্তমানে পরিবেশের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বিনষ্ট হওয়ার কারনে তা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। যারফলে নতুন নতুন রোগ সৃষ্টকারী ভাইরাসের আধিক্য পৃথিবীতে আতঙ্কের নতুন মাত্রা দিচ্ছে। ১৭২০ সালে বিশ্বজোড়ে প্লেগ আতঙ্ক, ১৮২০ সালে এশিয়াতে কলেরা আতঙ্ক, ১৯২০ সালে সারা বিশ্বে ফ্লু আতঙ্ক। ২০২০ সালে করোনার মহামারি আতঙ্ক। মানুষের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করা বর্তমানে সবচেয়ে দামী দাবী। পৃথিবীর প্রতিটি রাষ্ট্রকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে এই মর্মে, আমরা মরণাস্ত্র বর্জন করবো। নতুবা যুগে যুগে লাশের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘায়িত হবে। বিশ্বের সকল রাষ্ট্র মিলে জলবায়ু তহবিলকে শক্তিশালী করতে হবে।

বর্তমান বিশ্বে প্রাণঘাতী আতঙ্কের আরেক নাম কোভিড-১৯ ভাইরাস। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রগুলো ক্ষমতার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য জীবাণু অস্ত্র নামে মরণাস্ত্র তৈরীর সামান্যতম রাসায়নিক বিরূপ বিক্রিয়ায় বিশ্বে আজ করোনাভাইরাসের মহামারী। চীনের অর্থনৈতিক গরম হাওয়ায় ছোবলে আজ করোনাভাইরাস বিশ্বের হাওয়াকে করেছে দূষিত। চীনের জীবাণু অস্ত্র তৈরীর কারখানা ওহান থেকে করোনার সৃষ্টি। এখন সারা বিশ্ব করোনাকে মোকাবেলায় দিশেহারা। শুধু লাশের মিছিল দীর্ঘায়িত হচ্ছে! সারা বিশ্বে করোনার মহামারী পরিস্হিতির জন্য উন্নত রাষ্ট্র গুলো একক ভাবে দায়ী। উন্নত রাষ্ট্র গুলোর চিন্তাচেতনা কোভিড-১৯ এর চেয়েও খবিশ। আজ পযর্ন্ত বিশ্বের ১৮২ টি দেশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। ১০ হাজারও বেশী মানুষ করোনার ছোবলে মৃত্যুবরণ করেছে। জীবাণু অস্ত্রের সামান্যতম লিক, যদি সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়।

তাহলে যুদ্ধক্ষেত্রে জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার অথবা যে কোন কারনে জীবাণু অস্ত্রের বিস্ফারণ ঘটলে কি হতে পারে? পারমাণবিক অস্ত্র , রাসায়নিক অস্ত্র, জীবাণু অস্ত্র, উৎপাদনকারী দেশ গুলোকে গলা টিপে ধরার সময় এসেছে।উন্নত দেশগুলোর মরণাস্ত্র খেলায়, দায়হীন দেশগুলো কেন নিরব দর্শক হবে? মরণাস্ত্রবাজ রাষ্ট্রগুলোর রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে বলতে হবে, হয় মানব ধ্বংসকারী মরণাস্ত্র থাকবে, না হয় মানব থাকবে। প্রাণীকুলের জন্য পৃথিবী হলে প্রাণীকুল থাকবে, সকল প্রকার মরণাস্ত্র ধ্বংস করতে হবে। তাই করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত দায়হীন দেশগুলোকে এক্যবন্ধ হয়ে, মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী দেশ গুলোর সাথে পঙ্গপালের মতো আচরণ করতে হবে । একমাত্র এক্যবন্ধতাই মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী রাষ্ট্রের দৌরাত্ম্যকে রুখে দিতে পারে।

পরিবেশগত ইকো ব্যালেন্স করতে না পারলে, মরণাস্ত্র উৎপাদনকারী দেশগুলো মুখে প্রতিবাদের থুথু ফেলে, মরণাস্ত্র উৎপাদন বন্ধ করতে না পারলে। বিশ্ববাসীর ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে সকল প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হবে। কারন কত লক্ষ ব্যাক্টেরিয়া বা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিস্কার করবে বিশ্ব বিজ্ঞানীরা!

” আমরা মানবিক বিশ্ব চাই, মরণাস্ত্রবাজদের বিশ্ব চাই না “।

সাইদুর রহমান: লেখক ও কলামিস্ট

আপনার মতামত লিখুন :