ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান সেনাপ্রধানের

প্রকাশিত : ১৯ জুন ২০২২

ত্যাগের মানসিকতা নিয়ে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার জন্য সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। সিলেটের বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণকালে তিনি সেনা সদস্যদের প্রতি এ আহবান জানান। পরিদর্শনকালে সেনাপ্রধান কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক ও নিকটবর্তী বন্যা কবলিত এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেন এবং বন্যা কবলিত মানুষদের সাথে কথা বলেন।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাস্টার জেনারেল অফ অর্ডন্যান্সের মোঃ আবু সাঈদ সিদ্দিক,জিওসি ১৭ পদাতিক ডিভিশন মেজর জেনারেল হামিদুল হক, সেনাসদরের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তাগণ , সিলেট জেলার পুলিশ সুপার এবং গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ। সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিরলসভাবে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রাখা, জরুরী ত্রাণকার্য পরিচালনা, চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মকভাবে আত্মত্যাগের মাধ্যমে সহায়তা করতে নির্দেশনা প্রদান করেন।

সেনাবাহিনী প্রধান উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেন, আমরা সবাই মিলে যদি সম্মিলিতভাবে কাজ করি এই দুর্যোগ মোকাবেলা করতে পারব। তাই সেনা সদস্যদের সর্বাত্মকভাবে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে আন্তরিকতার কাজ করতে হবে। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়েও সকল ধরনের সহায়তা প্রদানের প্রদানের আশ্বাস দেন সেনাবাহিনী প্রধান।

গত ১৭ জুন হতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সিলেট অঞ্চলের ১৭ পদাতিক ডিভিশন সিলেট জেলার সিলেট সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, দোয়ারা বাজার, দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলা এবং কুমারগাঁও বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায়িত্ব পালন করছে।

সেনাবাহিনীর অন্যান্য ফরমেশন হতে সিলেট এলাকায় উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য বিভিন্ন নৌযান মোতায়েন করা হয়। এছাড়াও, কমান্ডো ব্যাটালিয়ানের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। একই সাথে নৌবাহিনীর একটি দল সিলেট এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে উদ্ধার কাজে অংশ গ্রহণ করেছে।

নেত্রকোনার বন্যা পরিস্থিতির অবণতি হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত ১৮ জুন ঘাটাইল অঞ্চল হতে ১৯ পদাতিক ডিভিশন এর ১২৫ জন সেনাসদস্য নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, উদ্ধার কার্যক্রম, ত্রাণ বিতরণ এবং চিকিৎসা সহায়তা প্রদানের জন্য মোতায়েন রয়েছে।

সেনাবাহিনীর সদস্যরা গত ১৮ জুন সুনামগঞ্জ থেকে এমআইএসটি -এর ১৫ জন শিক্ষার্থী এবং আজ সুনামগঞ্জের ছাতকে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসে।

এছাড়াও সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে বন্যা দুর্গত ২ হাজার ১০ জন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রেরণ, ৩ হাজার ৬২৫ জনকে চিকিৎসা সহায়তা প্রদান ও ২ হাজার ২০০ জনের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করে। এছাড়া বন্যার্তদের মাঝে সুপেয় পানির ব্যবস্থা, পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ বিতরণ এবং ইমার্জেন্সি রেসপন্স সেল গঠন করেছে সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অনান্য সকল অঞ্চলের ফরমেশনসমূহ নিজ নিজ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে এবং অসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। সেনাবাহিনী প্রধান বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত জাতির আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে এই মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

আপনার মতামত লিখুন :