আর কত ভয়াবহ নজির হলে সড়কে দৌরাত্ম্য থামবে দুর্বৃত্তদের?

প্রকাশিত : ১৮ জুলাই ২০২২

সমাজের গভীরতম অসুখে প্রতিদিন সড়কে ঝরছে প্রাণ। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার আগেই ট্রাক চাপায় মায়ের মৃত্যু ঘটছে। চলতি পথে পরিবারের একজন সদস্যের মৃত্যু এখন পুরনো খবর। সম্প্রতি একই পরিবারের কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে সড়কে। হৃদয়বিদারক, মর্মান্তিক এমন ঘটনা অমানবিক রাষ্ট্রের পরিচয় দেয় বলে মনে করেন জ্যেষ্ঠ নাগরিকরা। তাদের মতে, রাষ্ট্রকেই রুখে দাঁড়াতে হবে সড়কপথের দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৬ জুলাই) ময়মনসিংহের ত্রিশালে ট্রাক চাপায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়। এ ঘটনায় নিহত মায়ের গর্ভ থেকেই জন্ম নেয় কন্যা শিশু। এ ঘটনা দেশজুড়ে বেশ চর্চিত হচ্ছে। বাবা-মা ছাড়া এই শিশুর ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। আদর করে নাম রাখারও কেউ নেই তার।

একইদিনে মির্জাপুরে দ্রুতগতির বাস চাপায় নিহত হন পারভীন বেগম এবং তার দুই শিশু সন্তান সাদিয়া ও সুমন। বগুড়ার কাহালুতে প্রাইভেটকার ও মিনিট্রাকের সংঘর্ষে প্রাণ গেছে বাবা-ছেলেসহ ৪ জনের।

দেশজুড়ে সড়কে এভাবেই প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এ বছরের ফেব্রুয়ারির ঘটনা এখনও মানুষের মনে দাগ কেটে আছে। সে সময় কক্সবাজারের চকোরিয়ায় বাবার শ্রাদ্ধ শেষে ফেরার পথে ৫ ভাইয়ের মৃত্যু হয়। সব হারিয়ে দেশবাসী দেখে বৃদ্ধা মায়ের করুণ আকুতি।

সচেতন নাগরিকরা বলছেন, সড়কে চালকের বেপরোয়া আচরণ সমাজেরই ভয়াবহ এবং গভীরতম অসুখ। তারা বলছেন, সড়ক দুর্ঘটনার মতো এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় একটি পরিবারে একাধিক জনের মৃত্যুতে ওই পরিবারটি সারা জীবন একটি দুর্বিসহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যায়। তাছাড়া দুর্ঘটনার পর যদি কেউ কর্মক্ষম না থাকে তাহলে বাকি জীবন তারা পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়েই থাকে।

এ নিয়ে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, মালিক থেকে শুরু করে সড়ক নিয়ন্ত্রণ যারা করেন, সবাই এর সাথে যুক্ত। রাজনৈতিকভাবে এ বিষয়টির মোকাবেলা করার জন্য কোনো প্রস্তুতিই নেয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, সর্বক্ষেত্রেই দায়িত্বের পরিচয় দেয়া উচিত। কিন্তু এই বোধটা দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজে কোনো কাজ করছে না।

সচেতন মহলের দাবি, নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতে আইন প্রয়োগে কড়াকড়ির পাশাপাশি আরও জোরদার ভূমিকা নিতে হবে সরকারকে। সেই সাথে প্রত্যেকের সচেতনতা ও দায়িত্ববোধও আবশ্যক।

আপনার মতামত লিখুন :