৪ গণতন্ত্র কর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল মিয়ানমার

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০২২

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায়ে চারজন গণতন্ত্র কর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আজ সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া চার গণতন্ত্রকর্মী গত বছর একটি অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলকারী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মিলিশিয়াদের সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযুক্ত ছিলেন। গত জানুয়ারিতে একটি রুদ্ধদ্বার বিচারে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

এ রায়ের পর বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছিল। জাতিসংঘের দুজন বিশেষজ্ঞ এ দণ্ডাদেশকে জনগণের মধ্যে ‘ভয় ধরানোর জঘন্য প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছিলেন। স্থানীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমার বলেছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে গণতন্ত্রকর্মী কিয়াও মিন ইউ (জিমি নামে বেশি পরিচিত) এবং সাবেক আইন প্রণেতা ও হিপ-হপ শিল্পী ফিও জেয়া থাও রয়েছেন। অন্য দুজন হলেন হ্লা মিও অং এবং অং থুরা জাও।

এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন ৫৩ বছর বয়সী কিয়াও মিন ইউ এবং মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চির ৪১ বছর বয়সী বন্ধু ফিও জেয়া থাও। কিন্তু গত জুনে আদালত তাঁদের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। কোনো বিশদ বিবরণ ছাড়াই গ্লোবাল নিউজ লাইট অব মিয়ানমার জানিয়েছে, এই চারজনকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন এবং দণ্ডবিধির অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং কারাগারের পদ্ধতি অনুসারে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

মিয়ানমারে এর আগেও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার ইতিহাস রয়েছে। অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন অব পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) নামের একটি মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, মিয়ানমারে সর্বশেষ বিচার বিভাগীয় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিকে। রয়টার্স লিখেছে, এ ব্যাপারে একজন সামরিক মুখপাত্রের মন্তব্য জানতে টেলিফোন করা হলেও সাড়া মেলেনি।

গত মাসে সামরিক মুখপাত্র জাও মিন তুন মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, অনেক দেশেই মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। তাদের কারণে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও অন্তত ৫০ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক মারা গেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। ফিও জেয়ার থাউয়ের স্ত্রী থাজিন ন্যুন্ট অং বলেছেন, তাঁকে তার স্বামীর মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে জানানো হয়নি। মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে অন্য আত্মীয়দের সঙ্গেও যোগাযোগ করা যায়নি।

গত বছরের অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। সেনাবাহিনী শহরগুলোতে বেশির ভাগ শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে দমন করার পর দেশব্যাপী সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।

আপনার মতামত লিখুন :