দুর্নীতি মামলায় ওসি প্রদীপের ২০, স্ত্রীর ২১ বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০২২

মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি প্রদীপ কুমার দাশ এবং তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে দুদকের করা দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেছে আদালত। রায়ে প্রদীপ কুমারকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া তাদের সম্পতি বাজেয়াপ্ত করার কথা বলা হয়েছে।

বুধবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত। এছাড়া ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে প্রদীপ দম্পতিকে।

এর আগে, সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকিকেও আদালতে হাজির করা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে প্রদীপ ও চুমকিকে আদালতে আনা হয়। পরে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আদালত এ রায় ঘোষণা করে। সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয় গত ১৮ জুলাই। প্রদীপ দম্পতির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলে রায় ঘোষণার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। ওইদিন আদালতে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকিও উপস্থিত ছিলেন।

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন এই দম্পতির বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার পর থেকে পলাতক থাকলেও চলতি বছরের ২৩ মে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বরখাস্ত ওসি প্রদীপের স্ত্রী চুমকি।

আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ কারাগারে থাকলেও তার স্ত্রী চুমকি তখন পলাতক ছিলেন।

২০২০ সালের ২৩ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে চার কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন পাথরঘাটায় ৬ তলা বাড়ি, ষোলশহরে বাড়ি, ৪৫ ভরি সোনা, একটি গাড়ি, একটি মাইক্রোবাস, ব্যাংক হিসাব এবং কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে চুমকির নামে।

তাদের ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬৪ হাজার ৬৫১ টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিপরীতে বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় দুই কোটি ৪৪ লাখ ৬৬ হাজার ২৩৪ টাকা। দুই কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়েছে দুদক। এ ছাড়া চুমকি নিজেকে মৎস্য ব্যবসায়ী দাবি করলেও এ ব্যবসার কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড ও ছয় পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।

আপনার মতামত লিখুন :