কুয়াকাটা অন্যতম পর্যটন স্পট লেম্বুর বন থেকে এখন লেবুর বন


প্রকাশিত : ২৯ জুলাই ২০২২

কুয়াকাটা অন্যতম পর্যটন স্পট লেম্বুর বন থেকে এখন লেবুর বন

বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র ঘিরে মোট ২৫ টি ভ্রমণের স্পট রয়েছে, এরমধ্যে ১৮টি স্পট মোটরবাইক, অটোরিকশা, ইজিবাইক, মাহিন্দ্র, মাইক্রো দিয়ে ভ্রমণ করতে পারবেন, তবে টুরিস্ট ভোট দিয়ে সমুদ্রপথে আপনার ৭টি ভ্রমণ স্পট রয়েছে ভ্রমণের জন্য। এই ২৫টি ভ্রমণ স্পট এর মধ্যে লেবুর বন অন্যতম।
 তবে লেবুর বন নিয়ে রয়েছে ছোট্ট গল্প, লেবুর বন নাম শুনলে আপনি মনে করবেন এখানে হয়তো লেবু গাছের বাগান, জাতীয় কিছু একটা, অথবা লেবু বাগানের অসাধারণ কিংবা ব্যতিক্রমী কিছু দেখানো হয় বা পাওয়া যায়, এমনটা কল্পনা করে থাকতে পারেন। প্রকৃতপক্ষে আপনার কল্পনা তেমন কিছুই নেই লেবুর বনে। লেবুর বন কথাটি এসেছে লেম্বুর বন থেকে।
 লেম্বু ছিল রাখাইন সম্প্রদায়ের একটা মেয়ের নাম, এক সময় তাদের বসতবাড়ি বাগান ছিল এখানে, সমুদ্রের করাল গ্রাসে তাদের সেই ঘরবাড়ি জমি-জিরাত সবি হারিয়ে গেছে। রয়ে গেছে শুধু বাগানের এলাকার কিছু অংশ, আর নামটাও ধীরে ধীরে পরিবর্তন হতে লাগলো, মানুষের প্রচারণ বেড়ে যাওয়ায় পরে লেম্বু থেকে লেবুর বনে পরিচিতি লাভ করে।
 এই অপরূপ স্থানটি কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে ৮কিলোমিটার পশ্চিমে আন্ধারমানিক নদী আর সাগরের মোহনার কাছে অবস্থিত স্থানটি, লতাচাপলী ইউনিয়ন দক্ষিণ-পশ্চিমের শেষ বিন্দু এটি, সেই সাথে পটুয়াখালী জেলার বন বিভাগের সংরক্ষিত বন। পশ্চিমে আন্ধারমানিক নদীর মোহনা ওপারে ফাতরার বন, একটু মনোযোগ দিয়ে তাকালেই দেখতে পারবেন, ফাতরার বন আপনাকে সবুজ বেষ্টনী হাতছানি দিয়ে ডাকছে, বরগুনা জেলায় তালতলী উপজেলা পড়ছে বলে তাকে এড়িয়ে না যেতে মিনতি জানাচ্ছে। এবং সময়ের সাথে লেম্বুর বন পরিবর্তনে সবার কাছে এখন পরিচিত লেবুর নামে।
একই স্থানে চলার পথে আপনি ৬টি ভ্রমণ স্পট উপভোগ করতে পারবেন, চলার পথে শুটকি পল্লী, কিছুদূর গেলে সমুদ্রের জলের সাথে দেখতে পারবেন ঝিনুক চর, অতিক্রম করার পরে আপনাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে রয়েছে, লাল কাকড়ার চর, অন্যদিকে ঝাউবনের শাশা শব্দ আপনাকে মুগ্ধ করবে, বিকাল ঘনাতেই কমলা রংয়ের সূর্যটা চলে যাবে সমুদ্র জলে, একই সাথে আন্ধারমানিক নদী থেকে জানো জেলেরা সূর্যের সাথে কথা বলছে, আপনাকে মনমুগ্ধকরবে লেবুর বনের সুন্দর এই দৃশ্য নতুন করে তৈরি হওয়া ফিশ ফ্রাই।
 ঢাকা থেকে আসা পর্যটক, ইয়াসিন আরাফাত বলেন,  যদি কোন পর্যটক কুয়াকাটা এসে লেবুর বনের অপরূপ দৃশ্য উপভোগ না করে, তাহলে আমি বলব কুয়াকাটার আসল রূপটা তিনি দেখিনি, আমাকে মনমুগ্ধ করেছে এই দৃশ্য তবে এই দৃশ্য দেখতে হলে বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
 ট্যুর অপারেটর এ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক)এর সভাপতি, রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, লেবুর বন আমরা সুন্দরভাবে সাজিয়ে নিয়েছি, জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য আমরা কাজ করছি, লাল কাঁকড়া সবুজ বেষ্টনী আমরা আগলে রাখার চেষ্টা করছি, আমরা লক্ষ্য করলাম কুয়াকাটা পর্যটক আসলে তারা লেবুর বন দেখার জন্য চেষ্টা করে, তাই আমরা পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুন্দর স্থানকে আরও সুন্দর করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
 কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ জোনের, সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল খালেক বলেন, আমরা জানি পর্যটকদের আনন্দ ভ্রমনের অন্যতম একটি স্থান লেবুর বন। তাই আমরা সেই স্পোর্টটাকে কঠোর নিরাপত্তায় রাখি, পর্যটকদের সেবা দেওয়ার জন্য নিরাপদে আনন্দভ্রমণ কে আনন্দময় করতে কাজ করছে কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশ।
 জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ,
 কুয়াকাটা -কলাপাড়া প্রতিনিধি।

আপনার মতামত লিখুন :

এই বিভাগের সর্বশেষ