তাইওয়ানে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা চীনের

প্রকাশিত : ৩ আগস্ট ২০২২

দফায় দফায় আক্রমণের হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে মোটেই সহজভাবে নেয়নি এশিয়ার পরাশক্তি চীন। ন্যান্সির সফরের প্রতিক্রিয়ায় এরই মধ্যে তাইওয়ানে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছে চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) স্থানীয় সময় দিবাগত রাতে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উইউ কিয়ান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি অত্যন্ত সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং তারা সামরিক অভিযানের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আমরা তাইওয়ানের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে অভিযান চালাব। উইউ কিয়ান মনে করেন, চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষা, তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমন এবং তাইওয়ানের স্বাধীনতার নামে আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে বহিরাগত শক্তির অযাচিত নাক গলানোর জবাব হিসেবে পরিচালিত হবে এ অভিযান।

এ দিকে মঙ্গলবার রাতে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপে সফরে যান ন্যান্সি পেলাসি। ১৯৯৭ সালের পর এটি কোনো মার্কিন শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের তাইওয়ান সফর। এর আগে পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ সফরের জন্য সোমবার (১ আগস্ট) ওয়াশিংটন ত্যাগ করেন পেলোসি। গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান সফরের কথা রয়েছে।

যদিও তিনি ওয়াশিংটন ছাড়ার আগেই আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চাউর হয়ে যায়— চলতি এ সফরে তাইওয়ানেও যাবেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র ও তাইওয়ান সরকারের একাধিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আন্তর্জাতিক মিডিয়াগুলোকে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেন।

ন্যান্সি পেলোসি তাইওয়ানে আসতে পারেন— আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই সোমবার মার্কিন প্রশাসনকে সতর্কবার্তা দিয়েছিল বেইজিং সরকার। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান সোমবার বেইজিংয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, পেলোসি যদি সত্যিই তাইওয়ান সফর করেন, তাহলে তার পরিণতি খুবই গুরুতর হবে।

চীনের সেনাবাহিনী এক্ষেত্রে কোনোদিন ‘চুপচাপ বসে থাকবে না’ বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন লিজিয়ান। এ দিকে বেইজিংয়ের এই হুঁশিয়ারির জবাবে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবি বলেছেন, পেলোসির (তাইওয়ানে) যাওয়ার অধিকার রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের হুমকিকে ভয় পায় না। পেলোসি যদিও তাইওয়ানে যাবেন কি-না তা এখনো নিশ্চিত করেননি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্পিকার তাইওয়ানে সফর করবেন কি-না তা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছার ওপর।

উল্লেখ্য, সকল উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত চীনের হুঁশিয়ারিকে আমলে না নিয়ে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১১টার দিকে তাইওয়ানে পৌঁছান ন্যান্সি। এ সময় তাইওয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোসেফ উ নিজে উপস্থিত থেকে বিমানবন্দরে ন্যান্সি পেলোসিকে স্বাগত জানান।

ন্যান্সি তাইওয়ানে পৌঁছানোর কিছু সময় পরই সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিল চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

সূত্র : এএফপি

আপনার মতামত লিখুন :