এবার বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ

প্রকাশিত : ৪ আগস্ট ২০২২

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশে নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন জনবান্ধব পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ। এর আগে তিনি গাজীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বুধবার (৩ আগস্ট) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। তার আগে ঘুষ, দুর্নীতি মুক্ত, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব পুলিশ উপহার দিয়ে খুলনা থেকে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হয়েছিলেন এসএম শফিউল্লাহ। গাজীপুর ও খুলনা জেলায় দায়িত্ব পালন করার সময় জনবান্ধব পুলিশ গড়তে নানান পদক্ষেপ নেন তিনি। এছাড়া মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর অবস্থানে বদলে যায় গাজীপুর জেলার চিত্র। এছাড়া পুলিশের অভ্যন্তরীণ ঘুষ লেনদেন, বদলি বাণিজ্য, ও অবৈধ পরিবহন থেকে চাঁদা আদায় পুরোপুরি বন্ধ করে সাড়া ফেলে দেন মানবিক এই পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপার এস.এম. শফিউল্লাহ সততা, নিষ্ঠা, ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ দমন, মাদক নির্মূল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি প্রতিরোধ এবং গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন ও সার্বিক আইন শৃংঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘‘বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম-সেবা)’’ এ ভূষিত হন। এছাড়া গাজীপুর জেলায় দায়িত্ব পালন কালে ৮ বার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত হন তিনি। ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে আয়োজিত মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় অপরাধ নিয়ন্তণ ও আইন শৃংঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার ক্ষেএে আবদান রাখায় ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি তাকে ৮ বার ঢাকা রেঞ্জের শ্রেষ্ঠ পুলিশ সুপার নির্বাচিত করে পদক দেন। পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ পুলিশের অভ্যন্তরের দুর্নীতি বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন। বিশেষ করে মাদক স্পট থেকে টাকা আদায় বন্ধ, অবৈধ পরিবহন থেকে সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধ সহ থানায় মামলা রেকর্ড ও জিডি করতে সাধারণ মানুষের যাতে কোন প্রকার অর্থ দিতে না হয় সেজন্য নেন নানান উদ্যোগ। থানাগুলোতে নাগরিক সেবা সহজীকরণ, বিশেষ করে নারী, শিশু ও বৃদ্ধদের দ্রুত সেবা দিতে নানান উদ্যোগে বদলে গেছে থানা গুলোর চিত্র।

১৯৭০ সালের ১৫ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানার ঘড়ইগাতি গ্রামে জম্নগ্রহণ করেন পুলিশ সুপার এস.এম. শফিউল্লাহ। তার পিতা মরহুম শেখ আব্দুল হাকিম একজন সৎ, দক্ষ, আদর্শবান পুলিশ অফিসার ছিলেন। পুলিশ বাবার এই সন্তান এখন পুলিশ বিভাগের গর্ব। নিজ কর্মস্থলে গরীবের পুলিশ নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। চলাফেরা করেন খুব সাদামাটাভাবে।গরীব দু:খি সবার জন্য সর্বদা দরজা খোলা থাকে তার। তার সাথে দেখা করতে কারোর অনুমতি লাগে না। এস.এম. শফিউল্লাহ্ ২৪ তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে ২০০৫ সালের ০২ জুলাই এএসপি হিসেবে যোগদান করেন। তিনি এএসপি হিসেবে ১ম আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, মহালছড়ি, খাগড়াছড়ি, ডিএমপি, ঢাকা, সিআইডি, ঢাকা যশোর জেলায় ক-সার্কেল, নারায়ণগঞ্জ জেলার বি-সার্কেলে দক্ষতার সাথে কর্তব্য পালন করেন। তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ), খুলনা হিসেবে প্রায় ৬ বছর ও পুলিশ সুপার হিসাবে আড়াই বছর দায়িত্ব পালন করেন। এস.এম. শফিউল্লাহ্ দেশ-বিদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তিনি ইতিপূর্বে অনন্য সাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ “আইজিপি গুড সার্ভিস ব্যাজ” অর্জন করেন তিনি। অপরাধের বিরুদ্ধে তাঁর অবিরাম সংগ্রাম। কর্মসূত্রে যে সকল জেলাতে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন সেখানে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তার সাহসী ভূমিকার কারণে খুব সহজেই তিনি জনমনে ঠাঁই করে নিয়েছেন।

আপনার মতামত লিখুন :