চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা; ছয়জন গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ৪ আগস্ট ২০২২

নিরাপত্তাকর্মী ও মার্কেটিং অফিসার পদে আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে বেকার যুবকদের ফাঁদ পাতত একটি চক্র। চাকরির জন্য যোগাযোগ করা হলেই বিভিন্ন অজুহাতে হাতিয়ে নেওয়া হতো টাকা। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।

গত বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ ভুয়া নিয়োগপত্র, চেক, চুক্তিপত্র, কম্পিউটার ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—চক্রের মূল হোতা মো. মাছুম বিল্লাহ (৩৩), খাইরুল আলম রকি (২০), মো. কামরুজ্জামান ডেনিশ (২২), মো. মাহমুদুল হাসান (৩২), মাসুদ রানা (২৪), এসএম রায়হান (২৪)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি জানান, রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে চাকরি দেওয়ার নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আরিফ মহিউদ্দিন জানান, পরিকল্পিতভাবে ধাপে ধাপে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করত চক্রটি। আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দিয়ে অনভিজ্ঞ শিক্ষিত বেকার তরুণদের ফাঁদে ফেলত। যোগাযোগ করা হলে চাকরিপ্রার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ অফিসে এসে ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য বলা হতো। ইন্টারভিউর জন্য অফিসে আসার পর তাঁদের একটি ফরম পূরণ করতে দেওয়া হতো এবং ফরমে সংযুক্তি হিসেবে ছবি, অঙ্গীকারনামা, প্রার্থীর নিজ এবং পিতা-মাতার এনআইডির অনুলিপি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র প্রদান করতে হতো। এরপর তাঁদের কাছ থেকে ভর্তি ফরম, ট্রেনিং ও আইডি কার্ড বাবদ ১২ হাজার ৫০০ টাকা জামানত আদায় করত।

অফিসে যোগদান করলে তাঁদের নিয়োগপত্রে উল্লেখ করা হতো প্রতি মাসে নতুন নতুন চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতে হবে এবং এর ভিত্তিতে কমিশন হিসেবে বেতন প্রদান করা হবে। কিন্তু যোগদানের পর তাঁদের কোনো বেতন দেওয়া হতো না। চাকরিপ্রার্থীরা প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে জামানতের টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করত। এমনকি ভয়ভীতি দেখিয়ে লিখিয়ে নেওয়া হতো স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কোনো আর্থিক লেনদেন নেই। এভাবে চক্রটি গত আট মাসে প্রায় ৮০০ চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র‍্যাব কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।

আপনার মতামত লিখুন :