বঙ্গমাতার আত্মত্যাগ বিশ্বব্যাপী নারীদের কাছে দৃষ্টান্ত: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ৭ আগস্ট ২০২২

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার আত্মত্যাগ বিশ্বের সব নারীর জন্য দৃষ্টান্ত বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (৭ আগস্ট) সকালে ঢাকা বিশ্ববদ্যালয়ের সিনেট ভবনে বঙ্গমাতার অবদান নিয়ে আয়োজিত এক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন তিনি। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসার মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বঙ্গমাতা : এ প্যারাগন অব উইমেনস লিডারশিপ অ্যান্ড ন্যাশন বিল্ডিং ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলনের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বের নারীদের কাছে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব অনুকরণীয়। তিনি যেমন দেশ ও মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামে সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর তিনি জীবন ভিক্ষা চাননি; বরং অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এমন একজন মানুষ, যিনি তার জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন একটি জাতির স্বাধীনতার জন্য; একটি দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। বঙ্গমাতার অবদানগুলো আলোচনায় কম এসেছে উল্লেখ করে তার মেয়ে বলেন, ‍”দেশ ও দেশের মানুষের জন্য আমার মায়ের যে আত্মত্যাগ, তা খুব কমই উঠে এসেছে। দেশের স্বাধীনতার জন্য আমার বাবার যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামের সারথি ছিলেন আমার মা।

“সব সময় আমার মা সাহস জুগিয়েছেন। আন্দোলন-সংগ্রামের জন্য বাবা বেশির ভাগ সময় বাইরে থাকলেও কখনোই বিরক্ত করতেন না। বলতেন, ‘আমি দেখব, তুমি চিন্তা করো না’। সংসার সামলানোর পাশাপাশি জাতির পিতার অনেক সময়োচিত রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে বঙ্গমাতার পরামর্শ আন্দোলন-সংগ্রামে গতির সঞ্চার করেছিল বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমার মা খুনিদের কাছে নিজের জীবন ভিক্ষা চান নাই। তিনি নিজে জীবন দিয়ে গেছেন। জাতির পিতার সিঁড়িতে পড়ে থাকা মৃতদেহ দেখে সোজা বলে দিয়েছেন, ‘তোমরা উনাকে মেরেছ, আমাকেও মেরে ফেল।’ সেখানেই আমার মাকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করে।”

বঙ্গমাতা নির্মোহ জীবন যাপন করতেন উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমার মায়ের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। দেশের জন্য, মানুষের জন্য, দলের জন্য তিনি সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। পৃথিবীর যেকোনো মেয়ে তা অনুসরণ করতে পারবে। ১৫ আগস্ট পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে বঙ্গমাতার হত্যাকাণ্ডের ঘটনার স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘ঘাতকের বুলেট তাকে কেড়ে নেয়। সংসারের ব্যাপারে, রাজনীতির ব্যাপারে, প্রতিটি ব্যাপারে ‍তিনি যখন যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, সেটা যে আমাদের দেশের জন্য কত সঠিক ছিল, আর শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের জীবনটাও দিয়ে গেলেন।

আপনার মতামত লিখুন :