দিনাজপুরে মাথা ন্যাড়া করে নির্যাতনের মামলা স্বামীসহ শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ৮ আগস্ট ২০২২

দিনাজপুরের বিরলে এক গৃহবধূকে নির্যাতন ও মাথা অর্ধেক ন্যাড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্বামী মজিবর রহমান, শ্বশুর হাসেম আলী ও শাশুড়ি মনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে বিরল থানা-পুলিশ। গৃহবধূ রেশমা খাতুন (২৫) বর্তমানে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের কাজিপাড়া বিলাইমারী গ্রামে। আজ রোববার ভুক্তভোগীর দায়ের করা মামলায় তাঁর স্বামীসহ শ্বশুর-শাশুড়ি গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৮ বছর আগে গাইবান্ধা জেলার মৃত আসমত আলীর মেয়ে রেশমা খাতুনের বিয়ে হয় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কাজিপাড়া বিলাইমারী গ্রামের হাসেম আলীর ছেলে মজিবর রহমানের সঙ্গে।

ভুক্তভোগী রেশমা খাতুন অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী মজিবর যৌতুকের জন্য তাঁকে নির্যাতন করতেন। স্ত্রী রেশমা নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রথম পর্যায়ে অসহায় বাবার পরিবারের কাছ থেকে ১ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেন। এরই মধ্যে তাদের সংসারে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। মুনতাহা নামের মেয়ে সন্তানের বর্তমান বয়স ৬ বছর। কিছুদিন সংসারে সুখ-শান্তি থাকলেও যৌতুকের জন্য আবারও অত্যাচার শুরু হয় রেশমার ওপর। একপর্যায়ে রেশমা নির্যাতন সইতে না পেরে বাবার বাড়ি চলে যান। দীর্ঘদিন বাবার বাড়ি থাকার পর গত কয়েক দিন আগে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্থানীয় ইউপি সদস্যের আশ্বাসে আবার স্বামীর বাড়িতে আসলে আবার শুরু হয় নির্যাতন। গত শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে স্বামী মজিবর আরও ১ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে স্ত্রী রেশমার ওপর নির্যাতন চালায়।

নির্যাতনের শিকার রেশমা খাতুন জানান, শনিবার রাত ১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি মিলে তার ওপর নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে তার হাত-পা ও মুখে কাপড় বেঁধে মাথার চুল ন্যাড়া করে দেয়। সকালের দিকে গ্রামের লোকজন বিষয়টি জানতে পেরে রেশমাকে উদ্ধার করে বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রেশমা খাতুন এ ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান।

বিরল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল মোকাদ্দেস জানান, ‘রেশমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমরা তার সুষ্ঠু চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এ বিষয়ে বিরল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফখরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ রেশমা খাতুন বিরল থানায় স্বামীসহ ৩ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনজন আসামিকেই গ্রেপ্তার করে রোববার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন :