প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে পূজা সরকার নামে এক স্কুলছাত্রীকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র সরকার (২২) নামে এক বখাটে যুবককে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার (১০ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এই রায় প্রদান করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র সরকারের বাড়ি জেলার বেলকুচি উপজেলার শোলাকুড়া গ্রামে।

জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার শোলাকুড়া গ্রামে শ্রী পবিত্র সরকারের কন্যা পূজা সরকার শোলাকুড়া মরিয়ম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। এসময় প্রতিবেশি বখাটে যুবক শ্রী সঞ্জয় চন্দ্র সরকার পূজা সরকারকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিত। পূজা সরকার তার প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আসছিল।

ইতিমধ্যে পূজা সরকারের বাবা অন্যত্র পূজাকে বিয়ে দেয়ার জন্য পাত্র খুঁজতে থাকেন। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে পাত্র পূজা সরকারকে দেখতে আসেন। এতে বখাটে সঞ্জয় চন্দ্র সরকার ক্ষুব্ধ হয়ে পূজাকে হত্যার পরিকল্প করে। ২০২১ সালের ৩ মে সকালে পূজা সরকার বাড়ির উঠানে রান্নার কাজ করছিল। এসময় বখাটে সঞ্জয় চন্দ্র সরকার বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে। পরিকল্পনা মোতাবেক পূজা সরকারকে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে আঘাত করতে থাকে। পূজার চিৎকারে তার বাবা ও প্রতিবেশিরা এগিয়ে আসলে বখাটে সঞ্জয় চন্দ্র সরকার পূজা সরকারের মৃত্যু নিশ্চিত করে ধারালো ছুরি হাতে নিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় পূজা সরকারের বাবা শ্রী পবিত্র সরকার বাদী হয়ে সঞ্জয় চন্দ্র সরকারকে আসামি করে বেলকুচি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বখাটে সঞ্জয় চন্দ্র সরকারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হলে সঞ্জয় চন্দ্র সরকার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। মামলার ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সঞ্জয় চন্দ্র সরকারকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন বিচারক।