সুইস ব্যাংকের কাছে ৬৭ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট ২০২২

সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ৬৭ জনের অর্থ জমা সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশ। সবশেষ দেশটির আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউয়ের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছিল বাংলাদেশের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বিএফআইইউ। রবিবার হাইকোর্টে আসা বিএফআইউ’র প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চে আজ এই প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসীকাজে অর্থায়ন প্রতিরোধ, অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য বিএফআইইউ আন্তর্জাতিক আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এফআইইউ’র সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে থাকে। তবে বিশ্বব্যাপী এসব তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যম হলো এগমন্ড সিকিউর ওয়েব (ইএসডব্লিউ)। ২০১৩ সালের জুলাইতে ইএসডব্লিউ’র সদস্য হওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত ৬৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে তথ্য চায় বাংলাদেশ।

ইএসডব্লিউ’র মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে এ তথ্য দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু একজন ছাড়া অন্যদের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই বলে জানায় সুইজারল্যান্ড। আর এই একজনের তথ্য দুদককে দিয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইস ব্যাংক চলতি বছরের ১৬ জুন বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরদিন এগমন্ড সিকিউর ওয়েবের (ইএসডব্লিউ) মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যাংক ও ব্যক্তির জমানো অর্থের বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের জন্য সুইজারল্যান্ডের এফআইইউকে অনুরোধ করা হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পায়নি বাংলাদেশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি ব্যক্তিদের অর্থ রাখার বিষয়ে তথ্য জানাতে সর্বশেষ গত ১৭ জুনও চিঠি দিয়েছিল বিএফআইইউ। এর আগে গত ১১ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে অর্থ জমা নিয়ে নির্দিষ্ট করে দেশটির সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার কো‌নো তথ্য কেন চায়‌নি, তা জানতে চান হাইকোর্ট। হাইকোর্ট বলেন, আমরা সুইস রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পড়েছি। বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেতে প্রকাশিত সংবাদ কপি জমা দিতে বলা হয়েছে। এই সময় দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শোনেন আদালত।

ওইদিন আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। গত ১০ আগস্ট সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার বিষয়ে বাংলাদেশ নির্দিষ্ট কোনো তথ্য চায়নি বলে জানান ঢাকায় নিযুক্ত সুইস রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড।

সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবির) ২০২২ সালের জুন মাসে প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরে বাংলাদেশিরা প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে জমা করেছেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশিদের আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ। প্রতি ফ্রাঁ বাংলাদেশি ৯৫.৭০ টাকা হিসাবে মোট টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশিরা কত টাকা জমা রেখেছে, ওই তথ্য প্রতি বছর সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক দিয়ে থাকে। ওই অর্থ অবৈধ পথে আয় করা হয়েছে কিনা, এটি আমাদের পক্ষে বলা সম্ভব নয়।

আপনার মতামত লিখুন :