সুযোগ পেলে ২১ আগস্টের হামলার তদন্ত করবে বিএনপি

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০২২

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আ. লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার পেছনে তৎকালীন জোট সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগকে বরাবরের মতোই অস্বীকার করে আসছে বিএনপি। ঘটনার দেড় যুগ পরেও দলটি এই অবস্থানে অনড় রয়েছে।

ওই ঘটনায় আলোচিত ‘জজ মিয়া নাটক’ নিয়ে মুখে কুলুপ আটলেও এর বিচারকাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে দলটি। দলটির নীতি নির্ধারকদের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বিএনপিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই মামলার সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার হয়নি। এই অবস্থায় বিএনপির সুদিন ফিরলে আবারও গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করা হয়। ওই হামলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পান। তবে নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতা-কর্মী প্রাণ হারান, আহত হন অন্তত ৫০০ জন। এদের অনেকেই চির দিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন। গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং জোট সরকারের তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ৪৯ জনকে আসামি করা হয়। পরবর্তী সময়ে নিম্ন আদালতে মামলার রায়ে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

২১ আগস্টের ঘটনাকে মর্মান্তিক ও দুঃখজনক আখ্যা দিয়ে এর বিচারকাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হামলার বিচার নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়গুলো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা হয়েছে। বিএনপিকে হেয় করার জন্য, তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য এমন বিচারকাজ পরিচালনা করা হয়েছে। ন্যায়বিচার হয়নি। যেটা করা হলো, সেটা সম্পূর্ণ অন্যায়-অবিচার করা হলো। আমরা যদি কখনো সুযোগ পাই, সুষ্ঠু তদন্ত করার ব্যবস্থা করব।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মনে হয় গ্রেনেড হামলার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল, তারা এই মামলায় আদৌ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কি না সন্দেহ আছে। অপরাধীদের সঠিকভাবে চিহ্নিত করা যায়নি।’

তবে গ্রেনেড হামলা ও এর বিচারকে ঘিরে আলোচিত ‘জজ মিয়া নাটক’ নিয়ে অস্বস্তিতে আছে বিএনপি। পরিবারকে টাকা দিয়ে নোয়াখালীর জজ মিয়াকে আসামি করে তাঁর কাছ থেকে গ্রেনেড হামলার বিষয়ে সিআইডির স্বীকারোক্তি আদায়ের ঘটনা ‘জজ মিয়া নাটক’ হিসেবে পরিচিত। গণমাধ্যমে ফাঁস হয় যে, ঘটনাটি পুলিশের সাজানো একটি নাটক ছিল। ন্যায়বিচার, তদন্ত নিয়ে নানা কথা বললেও এই বিষয়ে মুখ খুলতে চান না দলটির দায়িত্বশীল নেতারা। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি ঠিক বলতে পারব না। তখন যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরাই বলতে পারবেন।

আপনার মতামত লিখুন :