মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সদয় দৃষ্টি কামনা

প্রকাশিত : ২১ আগস্ট ২০২২

সঞ্জিব দাস, গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিষ কুমারকে ভোলা জেলার মনপুরায় বদলির জন্য আদেশ জারি হয়। গত ১৪ আগস্ট এ আদেশ জারি হয়। এই আদেশ জারির পর থেকে উপজেলার হত দরিদ্র পরিবারগুলোর মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জনমনে দেখা দিয়েছে হতাশা। ইউএনও এর বদলির আদেশ প্রত্যাহার করে পুনরায় গলাচিপা উপজেলায় বহালের দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। স্যার চলে গেলে এই উপজেলার কি হবে? স্যার এই উপজেলার অনেক উন্নয়ন করেছেন, গরীব লোকদেরও নিয়মিত খোঁজ খবর রেখেছেন। স্যার অনেক ভাল মানুষ। এখান থেকে আমরা স্যারকে যেতে দেব না।

আবেগজনিত কন্ঠে উপরোক্ত কথা গুলো বলছিলেন উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের বাসিন্দা সূচিত্রা রানী দাস। গলাচিপার রেডক্রিসেন্ট কর্মী মো. হিমেল বলেন, ‘বন্যা দুর্গতদের বাঁচাতে ইউএনও স্যার দিনভর কাজ করেছেন এবং উপজেলার সকল ইউনিয়নের খোঁজ খবর নিয়েছেন, তাঁর বদলির আদেশ আমরা কিভাবে মেনে নেই’। গলাচিপা মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী লিজা বেগম বলেন, ‘ইউএনও স্যার আমাদের কলেজের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকা- গুলো বাস্তবায়ন করতে সর্বদা উৎসাহিত করতেন। আমাদের কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে ও সার্বিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে আমরা ইউএনও স্যারকে আমাদের উপজেলায় আবারও রাখতে চাই’। গলাচিপা পৌরসভার হিসাবরক্ষণ শাখার সবুজ পাল বলেন, ইউএনও স্যার উপজেলার সকল নাগরিকের সুখ দুঃখে ছুটে গেছেন। বর্তমানে ইউএনও স্যার উপজেলায় প্রথমবারের মত গণপাঠাগার নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ইউএনও স্যার বদলি হয়ে গেলে অনেক কাজই অসমাপ্ত থেকে যাবে। অনেক স্বপ্নই অবাস্তবায়িত রয়ে যাব’।

জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ জুলাই উপজেলা নিবার্হী কমকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে জনবান্ধব উদ্যোগে বদলে যায় উপকূলীয় অঞ্চল গলাচিপা উপজেলার চিত্র। প্রায় দুই বছরে গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে করোনাকালীন মহামারি, বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবেলা, সুষ্ঠ নির্বাচন, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে ব্যাপক কর্মদক্ষতায় পরিচয় দেন তিনি। উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তিনি ছিলেন ব্যাপক তৎপর। যার ফলে এই উপজেলায় করোনা রোগীর সংখ্যা ছিল অনেক কম। ইউএনওর এমন উদ্যোগ প্রশংসার পাশাপাশি মানুষের ভালোবাসা কুড়িয়েছে। গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্যোগে প্রশাসনিক কাজে গতি আসে। ইউএনওর উদ্যোগ ও সরকারের সহযোগিতায় উপজেলাজুড়ে সড়কে সৌর বিদ্যুতের বাতি স্থাপিত হয়। তিনি প্রতিটি ইউনিয়নের গ্রাম আদালতগুলো সর্বদা পর্যবেক্ষণের ফলে ইউনিয়ন থেকে কমে গেছে সকল প্রকার অনিয়ম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মাঝে ঘর ও জায়গা সহ প্রায় ১২শত পরিবারকে গৃহের আওতায় এনেছেন। এক্ষেত্রে তিনি স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়েছেন। গলাচিপা উপজেলাকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শতভাগ ভাতার ঘোষণার পরপরই হত দরিদ্রদের তিনি পর্যবেক্ষণ ও যাচাই বাছাই করে ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। ভাতাভোগীদের দুর্ভোগ কমানোর জন্য তিনি বিনামূলে মোবাইল ব্যাংকিং খুলে দিয়েছেন। বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানেও ছিল তার সরব উপস্থিতি ও সহযোগিতা। তাই আমরা গলাচিপা উপজেলাবাসী স্যারকে এখান থেকে যেতে দিব না বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন হত দরিদ্র পরিবারগুলো।

গোলখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মুজিব বর্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর পাওয়া জয়দেব সাধু ইউএনও স্যারের বদলীর খবর তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমাদের আবদার তিনি যেন আমাদের স্যারকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন।

 

আপনার মতামত লিখুন :