শেরপুরে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় মা-ছেলে গ্রেপ্তার

প্রকাশিত : ২৪ আগস্ট ২০২২

শেরপুরে তিন শতাধিক পাওনাদারের প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে আত্মগোপনে থাকার অভিযোগে বাবর অ্যান্ড কোং (প্রা.) লিমিটেডের বর্তমান স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান সুজন ও তার মা কামরুন নাহার হাসেমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার উত্তরায় রাজুক অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্টে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১ এর সদস্যরা। পরে ২৪ আগস্ট বুধবার তাদের শেরপুর সদর থানায় সোপর্দ করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বছির আহমেদ বাদল বলেন, তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫০টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মামলায় তারা বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। গ্রেপ্তার দুইজনকে আজ বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর শহরের নারায়ণপুর এলাকাস্থ বাবর অ্যান্ড কোং লিঃ এর প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আবুল হাসেম অগ্রিম ইট বিক্রি করে এবং ধান ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে বাকিতে ধান কিনে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। ৩৬ একর জমির ওপর স্থাপিত তাঁর প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে দুটি অটো ব্রিকফিল্ড, তিনটি ফিলিং স্টেশন, একটি অটো রাইস মিল, পোল্ট্রিফার্মসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান এবং জেলা হাসপাতাল রোডের কাছে তিনতলা বাড়ি ও বাগান রয়েছে।

২০১৮ সালে আবুল হাসেমের মৃত্যু হলে তাঁর জানাজায় জ্যেষ্ঠ পুত্র কামরুজ্জামান সুজন পিতার ঋণ পরিশোধ এবং ব্যবসা পরিচালনা করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন। এতে আশান্বিত হয়ে অনেকে পুনরায় অগ্রিম ইট কেনা ও বাকিতে ধান বিক্রি শুরু করেন। কিন্তু মালিক পক্ষ পরস্পর যোগসাজশে অগ্রিম ইট বিক্রির কথা বলে গ্রাহকদের থেকে নেয়া ৪৫ কোটি টাকা ও চাল বিক্রির পাঁচ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের কাছে রাখেন। এক পর্যায়ে রাতের আঁধারে সুজনসহ তার পরিবারের লোকজন ঢাকায় পালিয়ে যান এবং পাওনাদারদের টাকা ফেরত দিকে গড়িমসি শুরু করেন।

পরবর্তীতে অনেক পাওনাদার টাকা না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন। এসব মামলার মধ্যে তিনটিতে বিভিন্ন মেয়াদে তাদের কারাদণ্ড হয়। বাকী ৪৭টি মামলার কয়েকটি তদন্তাধীন ও কয়েকটি বিচারাধীন রয়েছে।

এদিকে পাওনা টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন তিন শতাধিক পাওনাদার। তাঁদের অনেকেই জমি-জমা বিক্রি করে, কেউব পেনশনের টাকা থেকে বাবর অ্যান্ড কোং-এ বিনিয়োগ করেছিলেন। পাওনা টাকা না পাওয়ায় আর্থিক অনটনে অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সুজন ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষ তাকে গ্রেপ্তার ও টাকা ফেরতের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেন।

আপনার মতামত লিখুন :