রাজনৈতিক সহিংসতায় ইরাকে নিহত ২০ দেশ ছাড়ছে বিদেশিরা

প্রকাশিত : ৩০ আগস্ট ২০২২

ইরাকের পার্লামেন্টের কাছে সুরক্ষিত এলাকা গ্রিন জোনে ভয়াবহ রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ২০ জন। রাজধানী বাগদাদে অবস্থানরত কুয়েতের নাগরিকদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দেয় হয়েছে। সহিংসতার মধ্যে নাগরিকদের ইরাকে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তেহরান। এ সময় আহত হয়েছে অন্তত ৩৫০ জন। এদের মধ্যে কেউ কেউ গুলিবিদ্ধ, অন্যরা কাঁদানে গ্যাসের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে, বলে জানিয়েছে বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সংস্থা আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় সোমবার রাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে সুরক্ষিত ও কূটনৈতিক এলাকা গ্রিন জোন রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ এখনও একই মাত্রায় চলছে।
দেশটির শিয়া ধর্মীয় গুরু ও রাজনীতিবিদ মুকতাদা আল-সদর তার সর্মথকদের ওপর নিরাপত্তাবাহিনীর নিপীড়ন বন্ধের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন।

এর আগে, সহিংসতা বন্ধ ও শান্তির স্বার্থে রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন এই শিয়া ধর্মগুরু। সেই সঙ্গে সারা দেশে তার দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ারও ঘোষণা দেন তিনি। তার রাজনীতি থেকে অব্যাহতির এই ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন সর্মথকরা। রাজধানী বাগদাদে কুয়েতের দূতাবাস সে দেশে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের ইরাক ছাড়ার নির্দেশ দেয়।
রয়টার্সের বরাত দিয়ে কুয়েতের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কুনা জানিয়েছে, যাদের ইরাকে যাওয়া কথা ছিল তাদের এখন সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

সহিংসতার মধ্যে নাগরিকদের ইরাকে না যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তেহরান। সেই সঙ্গে ইরাকমুখী সব ধরনের ফ্লাইট বাতিল করেছে প্রতিবেশী ইরান। ইরাকের সঙ্গে স্থলবন্দরও বন্ধ করে দিয়েছে তেহরান। ইরাকের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সংঘাতে জড়িয়ে পরা সব দলকে সংযত হবার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। গত ২৮ জুলাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রধানমন্ত্রী পদে মোহাম্মদ আল-সুদানির মনোনয়নের বিরোধিতা করে ইরাকের শিয়া ধর্মগুরু মুকতাদা আল সদরের সমর্থকরা বাগদাদের উচ্চ নিরাপত্তা এলাকা ভেঙে ইরাকের পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ করে।

যখন শত শত বিক্ষোভকারী পার্লামেন্টে প্রবেশ করে, তখন সেখানে কোনো পার্লামেন্ট সদস্য ছিলেন না। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে পুলিশ জলকামান ও কাদুনে গ্যাস ব্যবহার করলেও পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশ আটকাতে পারেনি। গত বছর ১২ অক্টোবর ইরাকের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগণনায় প্রাথমিকভাবে বড় ব্যবধানে যান শিয়া ধর্মীয় নেতা মুকতাদা আল-সদরের দল।

ইরানপন্থি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ভোট কারচুপির অভিযোগ করে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল রেকর্ড নিম্ন ৪১ শতাংশ। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা অভিযানে ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেটি পঞ্চম সাধারণ নির্বাচন।

আপনার মতামত লিখুন :