ফতুল্লায় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের চলছে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা!

প্রকাশিত : ১৪ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিনিধি: আর মাত্র ১৪-মাস বাকি জাতীয় সাংসদ নির্বাচনের। নির্বাচনকে ঘিরে ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামীলীগ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিসহ দল গোছানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে থাকা মেয়াদোত্তীর্ন কমিটিগুলো বিলুপ্তি ঘোষনার মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব তুলে দিতে উদ্যোগ নিয়েছেন দলের হাই কমান্ড। কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তে নড়ে চড়ে বসেছে ফতুল্লায় আওয়ামীলীগের সর্বস্তরের নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যে সদর উপজেলার ইউনিয়নগুলোর ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে সম্মেলনের ধামাকা বেজে উঠেছে।

এনায়েতনগর ইউনিয়ন আওতাভূক্ত ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ধাপে ধাপে সদর উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলোতে সম্মেলনের মাধ্যমে তৃনমূল আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হবে। এ অবস্থায় ফতুল্লা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডে আওয়ামীলীগের পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতৃবৃন্দ দলের সিনিয়র নেতাদের পিছনে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে। তবে, দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ মনে করেন, ওয়ার্ড পর্যায়ের রাজনীতি তৃনমূল রাজনীতির শেকড়ের ন্যায়। শেকড় ছাড়া যেমননি গাছ বেঁচে থাকে না ঠিক তেমন তৃনমূল ছাড়া দলের অস্তিত্ব টিকানো অসম্ভব। তাই ত্যাগী ও পরীক্ষিত কর্মীদের মূল্যায়নের মাধ্যমেই ফতুল্লা ইউনিয়নের ওয়ার্ডগুলোতে আওয়ামীলীগের কমিটি গঠন করা হবে।

সিনিয়র নেতৃবৃন্দের সাথে তাল মিলিয়ে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে তারা জানান, দৌড়ঝাঁপ কিংবা তদ্বীরে নয় বরং মাঠের নেতৃবৃন্দকে মূল্যায়নের মাধ্যমে দলীয় হাই কমান্ড আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব নির্ধারন করবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা। দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যদি ত্যাগী নেতৃবৃন্দকে মূল্যায়নের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন তাহলে সামনের দিকে দল এগিয়ে যাবে অন্যথায় এর প্রভাব দ্বাদশ নির্বাচনে পড়বে বলে আশংকা করেছেন সংগঠনের রাজপথের কর্মী সমর্থকরা। ফতুল্লা ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি পদে প্রত্যাশী যুবলীগ নেতা মেহেদী হাসান শাহীনের সাথে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দলের অস্তিত্বের শেকড় হচ্ছে তৃনমূল।

শেকড়ের যতœ নিলে যেভাবে গাছ থেকে ফলন সংগ্রহ করা যায় ঠিক একই ভাবে দল যদি মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন তাহলে দল সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এর উল্টো হলে দলের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাও অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনকল্পে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। তিনি আরো বলেন, বিএনপি-জোট সরকারের আমলে হাজারো নির্যাতন-হামলা-মামলার শিকার হয়ে দলের শ্লোগান নিয়ে রাজপথে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। কত মাস কিংবা বছর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম তার দিনক্ষন গুনে শেষ করা যাবে না। হাজারো নির্যাতনের পরও দলের সুনাম নষ্ট হউক এমন কিছু আমার মাধ্যমে করা হয়নি। দীর্ঘ সময় পর সম্মেলনের ধামাকা বেজে উঠেছে তাই আমরাও উজ্জীবিত হয়েছি। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে আমিও একজন পদ-পদবী প্রত্যাশী। দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ত্যাগীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে কমিটি গঠন করবে এমনটাই প্রত্যাশা করি। এর ব্যতিক্রম ঘটলে দল সাংগঠনিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলে তিনি আশংকা প্রকাশ করেছেন।

একই ওয়ার্ডে সাধারন সম্পাদক পদে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরুল ইসলাম অপু। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা কামরুল ইসলাম অপু বলেন, কর্মী হিসেবে আওয়ামীলীগের রাজনীতিতে যোগদান করেছি। ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ফরিদ আহাম্মেদ লিটনের নেতৃত্বে রাজনীতির খুনসুটি বিষয়ে অবগত হই এবং দেশপ্রেমে উদ্বুক্ত হতে শুরু করি। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ফরিদ আহাম্মেদ লিটনের নেতৃত্বে দলীয় সভা সমাবেশে যোগদানের মাধ্যমে দলের অস্তিত্বের জাগান দেই। ইতিমধ্যে ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কমিটি পূণর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা চাই, ফতুল্লা ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে ত্যাগী ও পরীক্ষিতদের মূল্যায়নের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হবে এমনটাই প্রত্যাশা করি।

এ ব্যাপারে ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিছির আলী ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের জানান, জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে ঢাকার পাশ্ববর্তী এলাকা ফতুল্লার রাজনীতি নেতৃবৃন্দের কাছে অনেকটা গুরুত্ব বহন করে। তাছাড়া, একটা সময় ফতুল্লা বিএনপির ঘাটিঁতে পরিনত ছিল। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমানের সঠিক দিক নির্দেশনায় আমরা ফতুল্লার মাটিকে আওয়ামীলীগের ঘাটিঁতে পরিনত করতে সক্ষম হয়েছি। তাই ফতুল্লার রাজনীতি কাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হলে দল সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে এ বিষয়টি বিবেচনার মধ্যদিয়ে আমাদের দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যোগ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা রাখি।

ফতুল্লা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক রেহান শরীফ ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংবাদিকদের জানান, ফতুল্লা ইউনিয়ন ওয়ার্ডগুলো নেতৃত্বে আসতে ইতিমধ্যে একাধিক কর্মী সমর্থকদের নাম শুনা যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের রাজনীতির সাথে জড়িত নেতা কর্মীদের নেতৃত্ব দেওয়ার স্বপ্ন থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে দলের স্বার্থ যাদের মাধ্যমে হাছিল করা সহ সংগঠন শক্তিশালী হবে এমন নেতৃবৃন্দের হাতেই ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের দায়িত্ব তুলে দেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন :