কলাপাড়া পাখিমারা খালের উপর নির্মিত হয়েছে ভাসমান সেতু


প্রকাশিত : ২৯ মে ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পাখীমারা খালের উপর নির্মান করা হয়েছে কাঠের ভাসমান ড্রাম সেতু। ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৯০টি প্লাস্টিকের ড্রামের উপর উপজেলা পরিষদ নান্দনিক এ সেতুটি নির্মিত করেছে। প্রায় ৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের এবং ৮ ফুট প্রস্থের ভাসমান সেতুটি দু’পাশে দেয়া হয়েছে রেলিং। এর ফলে কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা নিরাপদে স্বাচ্ছন্দে চলাচল করতে পারছে। এছাড়া এ সেতু পাল্টে দিয়েছে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামইরতলা, মজিদপুর, কুমিরমারা গ্রামীন জনপদের চিত্র। বিশেষ করে কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য এ সেতুটি পাড় হয়ে বাজারজাত করতে পারছেন বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের গামইরতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খালে একটি আয়রন ব্রীজ ছিলো। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে হঠাৎ করে এটি ভেঙ্গে যায়। এসময় ৪/৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এর পর নতুন করে কোন সেতু নির্মান না হওয়ায় শিশু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়তে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কেননা স্কুলের অন্তত: ৭০ ভাগ শিশু খালের ওপারের গ্রাম থেকে আসতো। ফলে স্কুলটিতে উপস্থিতির হার আশংকাজনক ভাবে কমে যায়। এছাড়া স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বাজারে পরিবহন করতেও ভোগান্তিতে পরে। তবে এ ভাসমান সেতুটি নির্মাণ করে দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, আগে নৌকা পার হয়ে স্কুলে যেতাম। এ সময় অনেক ঝুঁকি ছিলো। এমনকি আমাদের বই খাতা খালের পানিতে ভিজে যেতো। এখন মোরা ভাসমান এই সেতুর উপর দিয়াই স্কুলে যাই। স্থানীয় বসিন্দা রাজ্জাক কাজী বলেন, এটি নির্মানের ফলে সুবিধা হয়েছে শিক্ষার্থীসহ কৃষকদের। এখন উপজেলা শহরের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।

গামইরতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পূর্নিমা রানী বলেন, করোনাকালী সময় যখন স্কুল বন্ধ ছিলো। ঠিক সেই মুর্হুতে হঠাৎ ব্রিজটি ভেঙ্গে যায়। তখন স্কুল বন্ধ থাকায় সমস্যার সন্মূখীন হয়নি। যখন স্কুল খুলে এর পর দেখি স্কুলে উপস্থিতির হার অর্ধেকেরও কম হয়েছে গেছে। যা নিয়ে স্কুল পরিচালনা করা খুব কষ্ট সাধ্য হয়ে পরে। বর্তমানে ভাসমান সেতু নির্মান হওয়ার ফলে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও বেড়ে গেছে। বাচ্চারা আনন্দের সাথে বিদ্যালয়ে আসছে। মূলত এই বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের সার্বিক সহযোগীতায় এই খালের উপর ব্রিজটি নির্মান হয়েছে।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভিন সীমা জানান, শিশু শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে এ ভাসমান ড্রাম সেতু নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া সেতুটির সংযোগ সড়কের মাটি ভড়াটের কাজ আমি ব্যক্তিগত ভাবে করে দিয়েছি। এর ফলে নীলগঞ্জ ইউনিয়নের গামইরতলা, মজিদপুর, কুমিরমারা গ্রামের কৃষকদের চলাচল সহ তাদের উৎপাদিত কৃষি পন্য বাজারজাত করতে পারছেন।

কলাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল বারী পূর্ন বলেন, ব্রিজ ভেঙ্গে যাওয়ায় পর সেখানে গার্ডার ব্রিজ নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।

 

আপনার মতামত লিখুন :

এই বিভাগের সর্বশেষ