কাঁকড়া ফার্মে শ্রমিকদের বিক্ষো’ভ নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন সাকিব

প্রকাশিত : ২৩ এপ্রিল ২০২০

স্পোর্টস ডেস্ক : কাঁকড়া হ্যাচারির শ্রমিকরা বেতন নিয়ে বিক্ষো’ভের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাকিব আল হাসান। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাসে ব্যাখ্যা দিয়েছেন এই সম’স্যার। পরিবারসহ এখন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা সাকিব এ জন্য দু’ষছেন গণমাধ্যমকেও। বুধবার সকালে দেওয়া এই স্ট্যাটাসটি হুবহু অনুবাদ করে তুলে ধ’রা হলো-

”বিগত কয়েক দিনে এগ্রো ফার্মে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আমার বিল’ম্বিত বক্তব্যের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃ’খিত। সকল তথ্য ঠিকমত যাচাই-বাছাই করে সত্যটা আপনাদের সামনে তুলে ধ’রতে চেয়েছি বলেই এই বিলম্ব। যদিও এগ্রো ফার্মের সাথে আমার নাম সরাসরি যুক্ত, আমার পেশাগত ব্যস্ততার কারণে আমার অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মতো এই কোম্পানিটিও অন্যান্য মালিক/অংশীদারদের দ্বারাই পরিচালিত হয়ে থাকে। বেশিরভাগ সময়েই আমার জন্য ব্যবসার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড তদা’রকি বা সরাসরি অফিস পরিদর্শন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না।

আপনারা সবাই জানেন, এ বছরের শুরু থেকে আমি আমেরিকায় অবস্থান করছি আমার পরিবারের সাথে, পরিবারের নতুন অতিথির আগমনের অপেক্ষায়। এই সময়ের মধ্যে এগ্রো ফার্মের বর্তমান ব্যবসায়িক অবস্থা আমার জানা ছিল না এবং শ্রমিক অসন্তো’ষের ব্যাপারটি আমি মিডিয়ার মাধ্যমেই জানতে পারি। অন্যান্য মালিকেরা এক্ষেত্রে আমাকে বিগত কয়েক মাসের সকল তথ্য যথাযথভাবে জানাতে ব্য’র্থ হয়েছে। কিন্তু তারা আমাকে অবহিত করেছে, কিছু সংখ্যক কর্মচারী যারা কর্মরত ছিলো তাদের বেতন আগামী ৩০ এপ্রিল, ২০২০ তারিখের মধ্যেই দিয়ে দেয়া হবে।

এক্ষেত্রে উল্ল্যেখযোগ্য যে এ বছরের জানুয়ারি মাসের শেষেই প্রায় সব কর্মচারীকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এপ্রিলের ৩০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রতি’শ্রুতি দিয়েও কর্মচারীরা হঠাৎ রাস্তায় নেমে বিশৃ’ঙ্খলা সৃষ্টি করায় ধা’রনা করা যায়, কারো গো’পন ও কু’প্ররো’চনাতেই এমনটি হয়েছে। তবে, যখনই আমি বুঝতে পারি যে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, তখনই আমি কোম্পানি এবং বাকি অংশীদারদের সাহায্য ছাড়াই আমার নিজের তহবিল থেকে তাৎ’ক্ষ’নিক বকেয়া বেতন পরিশো’ধ করি।

আমি বিশ্বাস করি এটি কোম্পানির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার এবং এটা নিজেদের মধ্যেই রাখা উচিৎ ছিলো। কিন্তু আমি বি’স্মি’ত হয়েছি এটা দেখে যে কর্মচারীরা মাসের শেষে বেতন নিতে সম্মতি জানিয়েও তারা আন্দো’লনে অংশ নিলো! অনেকের মত আমিও এই মহামা’রী মো’কাবে’লায় তহবিল সংগ্রহ করে আমার কর্মচারীদের মতই অন্যান্য অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু আমি এটা বুঝে উঠতে পারছি না, মানুষ কেন ভাবছে আমি আমার কর্মচারীদের ব’ঞ্চি’ত করবো যাদের আমি গত ৩ বছর ধ’রে বেতন দিয়ে আসছি।

আমি সত্যিই ম’র্মাহ’ত যে মিডিয়া ব্যাপারটির সত্যতা যাচাই না করেই আংশিকভাবে সবার সামনে তুলে ধরেছে। আংশিক মি’থ্যা এবং বিভ্রা’ন্তিমূলক সংবে’দনশীল শিরোনামগুলির চেয়ে তাদের সত্যতা যাচাই করে নেওয়াই উচিত ছিলো। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সত্য অনুস’ন্ধান করে সঠিক তথ্য মানুষকে জানানো মিডিয়ার বড় দায়িত্ব, তা না হলে অযথাই আমার মতো অনেক মানুষই এ ধ’রনের খবরের জন্য ক্ষ’তিগ্র’স্ত হবে। তারা শুধুমাত্র আমাকে দো’ষারো’প না করে পুরো ব্যাপারটি সকল অংশীদারের নামসহ সবার সামনে তুলে ধ’রতে পারতো।

শুধু আমি না, কেউই এ ধরনের মি’থ্যা অ’ভিযো’গ প্রত্যা’শা করে না। আশা করি মিডিয়া এবং সাংবাদিক ভাই-বোনেরা সংবাদ সকলের কাছে সঠিকভাবে উপস্থাপনের ক্ষেত্রে আরো যত্নশীল হবেন। জাতি হিসাবে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি বর্তমান সং’ক’টকে সামনে রেখে আমাদের আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা প্রয়োজন এবং যেকোন ধরনের বিভ্রা’ন্তিকর তথ্য, গু’জ’ব এবং মি’থ্যার বি’রু’দ্ধে সজা’গ ও সোচ্চার হওয়া দরকার। আমি মনে করি এখন অন্যান্য যেসব অধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে সেদিকেই আমাদের মনোযোগটা বেশি দেয়া উচিৎ। সবাই দয়া করে বাসায় থাকবেন, নিরা’পদে থাকবেন।

আপনার মতামত লিখুন :