পটুয়াখালীর দশমিনায় ৪০বছর আগে দাফন করা লাশ অক্ষত! ছবি ভাইরাল
প্রকাশিত : ২ জুন ২০২১

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে কবর ভেঙ্গে প্রায় ৪০ বছর আগের দাফন করা একটি অত লাশ উদ্ধার নিয়ে কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। লাশ দেখতে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ। লাশের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। উদ্ধার করার পর পূণরায় দাফনের আগে দোয়া মিলাদের অংশ নিতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ছুটে আসেন বহু মানুষ। অত লাশ উদ্ধারের ঘটনাটি পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকার বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর তীরের হাতেম আলী ফকিরের বাড়ির ঘটনা। তবে মৃত ব্যক্তির পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, গত মঙ্গল ও বুধবারের ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তান্ডবে উপজেলার বিস্তীর্ন জনপদ ও নদী তীরবর্তী এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে নদী ভাঙনে উপজেলার রনগোপালদী ইউনিয়নের চরঘূণি এলাকা বড়াগৌরঙ্গ নদীর তীরের হাতেম আলী ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। নদীর ভাঙ্গনে ওই এলাকার ফকির বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ভেঙ্গে একটি অত লাশ বেড়িয়ে আসে। এ নিয়ে শুক্রবার বিকালে থেকে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অত লাশ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে দশমিনা উপজেলাসহ পাশর্^বর্তী বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ এক নজর দেখার জন্য শুক্রবার থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করেন ওই এলাকায়।
এ ঘটনার পর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় অত লাশের ছবিটি। বিভিন্ন মানুষ ফেসবুকে ছবিটি আপলোড দিয়ে লাশকে মোমিন বান্দা দাবি করে বিভিন্ন লেখা পোস্ট করেন। শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কথা হয় ওই বাড়ির রবিউল ইসলামের সাথে। তিনি জানান, লাশটি তাদের বাড়ির হাশেম ফকিরের। তার দাবি হাশেম ফকির ৪৫ থেকে ৪৬ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। তিনি আরও জানান, হাশেম ফকির তাদের বাড়ির হাতেম আলী ফকির চিশতিয়া এর ভক্ত ও সম্পর্কে চাচাতো ভাই ছিলেন।
অন্যদিকে ওই এলাকার ৯০ বছরের বৃদ্ধা মোঃ হাবিবুর রহমান (চন্দন মাষ্টার) জানান, মরহুম আইনউদ্দিনের ছেলে হাশেম ফকির। হাশেম ফকির ১৯৭০ সালের বন্যার পরে মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের বাবা আইনউদ্দিন ফকির ১৯৭০ সালের বন্যার আগে মারা গেছেন। হাশেম ফকিরের দুই ছেলে খালেক ও বারেক। তবে অত লাশটি হাশেমের কিনা আমি জানি না। ওই অত লাশটি হাশেমের বাবা আইন উদ্দিনের কিনা সেটাও নিশ্চিত নয় বলে তিনি জানান। তার বক্তব্য অনুযায়ী অত লাশটির পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। হাশেম ফকিরের ছেলে মোঃ খালেক জানান, লাশটি তার বাবার। তিনি ১৯৭৫ সালে দিকে মারা গিয়েছিলেন। স্থানীয়রা জানান, জৈনপুরী পীর সাহেবের নির্দেশে অত লাশটির শরীরের কোন অংশ খুলে না দেখে শুধু মিলাদ দিয়ে গত শনিবার সকালে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রনগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান এ.টি.এম আসাদুল হক নাসির সিকদার জানান, লাশ পাওয়ার খবর শোনার পর তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানিয়েছেন। অত লাশটি দেখতে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। দশমিনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রেজাউল করিম জানান,আল্লাহ্’র অলি, আল্লাহ্অলা বান্দা, হাফেজ ও ঈমানী ব্যক্তি হলে তাদের একটি পশম পর্যন্ত মাটি খায় না। আল্লাহ্অলাদের লাশ আল্লাহ্ রা করতে পারেন। এই রকম প্রমাণ আমরা আগে বহু দেখেছি। এই নিয়ে কোরআন হাদিসেও বলা আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।