ছেলে হত্যার দায়ে থানায় মামলা’ নরসিংদী থেকে অভিযুক্ত মা নাসরীনের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
প্রকাশিত : ১ জুন ২০২১

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের পাইনাদী এলাকায় নাজমুস সাকিব নাবিল (২০) নামের এক মাদরাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে তার মা নাসরীন আক্তারের (৪৫) বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে বাদী হয়ে নিহতের পিতা ছগির হোসেন মামলা দায়ের করেন। মামলায় নাসরীন আক্তার ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে।
মামলার এজাহারে ছগীর হোসেন উল্লেখ করেন, নাজমুস সাকিব নাবিলের পিতা রোববার রাত ৮ টায় বাসায় ফিরে ঘর তালাবদ্ধ দেখতে পান। তার নিকট থাকা চাবি দিয়ে তালা খুলে রুমে প্রবেশ করে সন্তানকে জখমপ্রাপ্ত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখেন। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের ২০- ২৫ টি দাগ রয়েছে। পরে আশপাশের লোকজনকে ডেকে তাদের সহযোগিতায় সাকিবকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ধানমন্ডি হেলথ্ কেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়ার সময় সাকিব মারা যায়। ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী পলাতক ছিলেন।
এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেন,তার স্ত্রীর দীর্ঘদিন যাবৎ মানসিক সমস্যা ছিল।তার সন্দেহ স্ত্রী নাসরিন ও অজ্ঞাতনামা আসামির সহায়তায় সন্তান সাকিবকে হত্যা করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান। এদিকে ছেলে হত্যাকান্ডের পর পলাতক মা নাসরীন আক্তারের ঝুলন্ত লাশ নরসিংদীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৩১ মে) বিকেলে নরসিংদী শহরের বাজিড়মোড়ের নিরালা নামক আবাসিক হোটেল থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে সদর মডেল থানা পুলিশ। তবে ওই নারীর নাম নাসরীন আক্তার হলেও হোটেলের রেজিস্টারে তার নাম রেহানা আক্তার লেখা ছিলো। বাবার নাম লিখেছিলেন আবু তাহের এবং মায়ের নাম ফাতেমা জোহরা। ঠিকানা উল্লেখ করেছেন নরসিংদীর মাধবদীর ডৌকাদি গ্রাম।
হোটেল কর্তৃপক্ষ বলছে, রোববার (৩০মে) সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই নারী একাই হোটেলে রাত্রিযাপন করতে আসেন। ওই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, গাজীপুর থেকে তিনি এসেছেন। রাত হয়ে যাওয়ায় হোটেলে থাকতে চান। রেজিস্টারে নাম-ঠিকানা লেখার পর ওই নারীকে হোটেলটির নিচতলার ৬ নম্বর কক্ষ দেওয়া হয়। ওই সময় তিনি একটি পলিথিনের ব্যাগে করে রাতে খাওয়ার জন্য নাশতা সঙ্গে এনেছিলেন। এরপর তিনি আর ওই কক্ষ থেকে বের হননি। সোমবার সকালে তাঁর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অনেকক্ষণ ডাকাডাকি করেন হোটেলটির কর্মচারীরা। পরে নরসিংদী মডেল থানায় ঘটনা জানানো হলে দুপুরের দিকে পুলিশ এসে ওই কক্ষের দরজা ভেঙে তাঁর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, নরসিংদীতে উদ্ধার হওয়া নারীর লাশের বাবার নাম ও চেহারায় মিল পেয়েছি আমরা।