রাজধানীর বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাম আসা দুই নারী শিক্ষার্থীর একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার শিক্ষার্থীর নাম ফারিয়া হক টিনা। তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।
শুক্রবার (৯ মে) বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার গ্রেফতারের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফারিয়া হক টিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
পারভেজ হত্যা মামলায় গত ২৩ এপ্রিল রাতে গাইবান্ধা থেকে প্রধান আসামি মেহরাজকে গ্রেফতার করা হয়। হৃদয় মিয়াজী নামের আরেক আসামিকে ২১ এপ্রিল কুমিল্লার তিতাস উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র্যাব।
মামলায় গ্রেফতার মাহাথির হাসান ও মো. আল কামাল শেখ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা এখন কারাগারে। গ্রেফতার আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানিও রিমান্ড শেষে কারাগারে রয়েছেন।
সর্বশেষ ফারিয়া হক টিনাকে গ্রেফতার করা হলো। মামলাটিতে এ পর্যন্ত মোট সাতজন গ্রেফতার হয়েছেন। এর আগে গত ২৩ এপ্রিল জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করতে বলেন আদালত।
গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙারা খাচ্ছিলেন পারভেজ। তাদের পাশে সদ্য ভর্তি হওয়া ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের বন্ধু ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রী ছিলেন। এক পর্যায়ে দুই ছাত্রী অভিযোগ করেন পারভেজ তাদের উত্যক্ত করেছেন। তারা বিষয়টি প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির প্রক্টরকে জানান।
এরপর প্রক্টর পারভেজকে ডেকে নেন। প্রক্টর অফিসে পারভেজ দাবি করেন, তিনি বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের আলাপের বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন, কাউকে উত্ত্যক্ত করেননি। একপর্যায়ে ওই দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলে পারভেজ ক্ষমাও চান।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, সেখানেই ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা পারভেজকে হুমকি দেন। প্রক্টরের অফিস থেকে বেরিয়ে আসার পর কিছু বহিরাগত এসে আক্রমণ করেন। একপর্যায়ে ধারালো কিছু দিয়ে পারভেজের বুকে আঘাত করে তারা পালিয়ে যান। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় পারভেজকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আগেই তার মৃত্যু হয়ে বলে জানান।
এ ঘটনায় নিহতের মামাত ভাই হুমায়ুন কবীরের করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুই নেতাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া নাম না দিয়ে আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারের আসামিরা হলেন- মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)।
আপনার মতামত লিখুন :